ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত চবি কর্মচারী মেহেদী হাসান
Published: 30th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পালি বিভাগের অফিস সহকারী মেহেদী হাসানকে ঘুষ লেনদেন ও প্রতারণার অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহাইব কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড.
অভিযোগকারী মুহাম্মদ ইয়াহিয়া, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট সেকশন অফিসার পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান তার কাছ থেকে প্রথমে চার লাখ এবং পরে আরও এক লাখ টাকা নেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি না হওয়ায় একপর্যায়ে অভিযুক্ত তিন লাখ টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চাকরির বিষয়ে অগ্রগতি জানতে রেজিস্ট্রার দপ্তরে গেলে ছাত্ররাজনীতির একটি অংশের নেতাকর্মীরা তার রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চান এবং অর্থ দাবি করেন। অর্থ না দেওয়ায় তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলেও দাবি করেন ইয়াহিয়া। বিষয়টি নিয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান সমকালকে বলেন, ‘আমি আসলে অর্ডারে কাজগুলো করেছি। ভিসি ম্যামের পিএস আমাকে যা নির্দেশ দিতেন, আমি তা পালন করতাম। আমি কখনো নিজ উদ্যোগে কাউকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিইনি।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্ত কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ক্ষমতাধর মহলের ঘনিষ্ঠ পরিচয়ের আশ্রয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন এমন অভিযোগ অতীতে একাধিকবার মৌখিকভাবে উঠলেও লিখিত অভিযোগ এবারই প্রথম পাওয়া গেছে।
তবে এ ঘটনায় আরেকটি প্রশ্ন সামনে এসেছে, চাকরি পাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘুষ প্রদানকারী অভিযোগকারী নিজেও কি দায়মুক্ত থাকতে পারেন? নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বেচ্ছায় অর্থ লেনদেনে জড়িয়ে পড়া এক ধরনের অনৈতিকতা ও নীতিগত বিচ্যুতি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তদন্ত কেবল গ্রহীতার বিরুদ্ধেই নয়, বরং প্রক্রিয়ায় জড়িত উভয় পক্ষের ভূমিকাই পর্যবেক্ষণে থাকা উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. কালাম উদ্দিন সমকালকে জানিয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত বিবেচনায় আনা হতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩
দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
ঢাকা/রতন/মাসুদ