বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরছেন, তাঁর আগমন ঘিরে দলীয়ভাবে বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে—কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন আলোচনা বা গুঞ্জন চলছে। যদিও তারেক রহমান ঠিক কবে নাগাদ দেশে ফিরছেন, সে বিষয়ে ঢাকায় বিএনপির নেতারা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। তবে তাঁরা বলছেন, শিগগিরই তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়।
যদিও দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের দেশে ফেরার পর তাঁর নিরাপত্তা, বাসভবন, রাজনৈতিক কার্যালয়সহ অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের প্রস্তুতি দৃশ্যমান নয়।
এ বিষয়ে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, তাঁরা দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতাকে দেশের মাটিতে গণ-অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত। কিন্তু তিনি এখনই ফিরবেন কি না, সে বিষয় চূড়ান্ত হয়নি। এ ক্ষেত্রে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসহ নানা দিক বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই কোন সময় দেশে ফিরলে বিএনপির রাজনৈতিক অর্জনের পাশাপাশি ব্যক্তি তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনটা উজ্জ্বল হয়, সেটি দেখা হচ্ছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ তারেক রহমানের দেশে ফেরার একটি সম্ভাবনা আছে। তবে সেটিও চূড়ান্ত কিছু নয়।জুলাই-আগস্টের মধ্যে তারেক রহমানের ফেরা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি জোরালো আলোচনা আছে। এর কারণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষে বিএনপি ৩৬ দিনের কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পলায়নের বর্ষপূতিতে ঢাকায় বড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে বিএনপির। ওই সমাবেশে তারেক রহমান উপস্থিত থাকতে পারেন; নেতা-কর্মীদের মধ্যে এমন আলোচনা রয়েছে। তবে ঢাকায় দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বিএনপি। সেদিন বিমানবন্দরসহ রাজধানীতে বৃহত্তম জমায়েত করার পরিকল্পনা রয়েছে দলের। সে ক্ষেত্রে চলতি জুলাই বা আগস্টে তাঁর ফেরার বিষয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করেছে বর্ষা। আষাঢ় ও শ্রাবণ—এই দুই মাস বর্ষাকাল। আজ শনিবার, ৫ জুলাই ২১ আষাঢ়, এরপর শ্রাবণ মাস। এর ফলে বর্ষায় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে তারেক রহমান দেশে ফিরলে বিমানবন্দরসহ ঢাকায় বিএনপির যে বড় জনসমাগমের পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এর ফলে জুলাই-আগস্টে তারেক রহমানের দেশে ফেরায় কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে দলের কেউ কেউ মনে করছেন।
বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি তারেক রহমানের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় দেখেন। তাঁর মতে, একটি ফেরা হতে পারে রাজসিকভাবে লালগালিচায়। সেটি হতে পারে নির্বাচনে জয়ী হয়ে অথবা সরকার গঠনের আগে-পরে। আরেকটি হতে পারে, নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে বিশেষ প্রয়োজনে।এমতাবস্থায় তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাব্য সময় নিয়ে আরও কয়েকটি আলোচনা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এর একটি হতে পারে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগে অথবা তফসিল ঘোষণার পরপর। এ সময়ে দেশে ফিরে তিনি দলের পক্ষে একটি জোয়ার সৃষ্টি করে নির্বাচনে ভালো ফল আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে ১৩ জুন লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে বৈঠক হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন র দ শ র জন ত ক প রস ত ত ব এনপ র সরক র আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক