অসুস্থ গুরুর পাশে প্রাক্তন ছাত্রী, দিতে চেয়েছেন কিডনি
Published: 10th, July 2025 GMT
‘গুরু দক্ষিণা’ সিনেমার কথা মনে আছে? এ সিনেমায় জয়ন্ত চরিত্রে তাপস পাল গুরুর দেওয়া শিক্ষা হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন, জীবনের কঠিন সময়েও তাঁর প্রতি দায়িত্ব ভুলে যাননি। বাস্তবেও এবার ঘটেছে তেমনই এক ঘটনা। এক সংগীতশিক্ষকের জীবনসংকটে পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরই এক প্রাক্তন ছাত্রী।
সোহরাব হোসেন, গান শেখাচ্ছেন প্রায় ৫০ বছর ধরে। বর্তমানে তিনি কিডনির জটিল রোগে ভুগছেন। তাঁকে বাঁচাতে প্রয়োজন কিডনি প্রতিস্থাপন। চিকিৎসার ব্যয় বিপুল। ঠিক তখনই জীবনের এই কঠিন সময়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁর এক পুরোনো ছাত্রী।
প্রায় ২০ বছর আগে আশুগঞ্জ সার কারখানার আবাসিক এলাকায় আনিকা আফরিন ঐশীকে গান শেখাতেন সোহরাব হোসেন। সেই ছোট্ট ঐশী এখন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্রী। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুরুর অসুস্থতার খবর পেয়ে আর স্থির থাকতে পারেননি। সবকিছু গুছিয়ে ছুটে এসেছেন ঢাকায়। ঢাকার বাসায় গুরুকে এনে রেখেছেন, সেবা করছেন, চলছে চিকিৎসা।
প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় ঐশীর। জানান, শুধু তিনিই নন, তাঁর বড় ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীও সংগীতের তালিম নিয়েছেন সোহরাব হোসেনের কাছে। ঐশী বলেন, ‘সংগীতের প্রথম তালিম নিয়েছিলাম ওস্তাদজির কাছেই। আজ আমি যে জায়গায় পৌঁছেছি, তার পুরো কৃতিত্ব ওনার। তাঁর অসুস্থতার খবর জানার পর কিছুই ঠিকমতো করতে পারছিলাম না। উনি অনেক অসুস্থ। সবার কাছে তাঁর জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ চাই। আমার ওস্তাদজি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক