রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ গোটা দেশ। জনসমক্ষে এমন নির্মম ঘটনা স্তম্ভিত করেছে সকলকে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু শোবিজাঙ্গনের তারকারাও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, কঠোর বিচারের দাবি করেছেন।

তবে সোহাগের এই ঘটনায় সাধারণ মানুষকে রাজনৈতিক কোনো এজেন্ডার ফাঁদে পা না দিতে সতর্ক করেছেন আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মোহাম্মদ মুক্তাদির।

শনিবার দুপুরে ফেসবুকে সালমান লিখেছেন, ‘যে ধর্ষণ আর হত্যাকাণ্ড আপনাকে কষ্ট দেয়, সেগুলো পাশের রাজনৈতিক লোকগুলোর কাছে আনন্দের খোরাক হয়ে দাঁড়ায়। শুধু কোনও জাতীয় সংকটে কেউ আপনার পক্ষে কথা বলছে বলে মনে করবেন না যে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে আছে। তারা শুধু সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছে নিজেদের স্বার্থের জন্য। মানবতার জন্য নয়, সহমর্মিতার জন্য নয়।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘যারা নিঃস্বার্থভাবে সবসময় আপনার পাশে থেকেছে, তাদের অনেকেই তাদের জীবন বা হাত-পা হারিয়ে ফেলেছে। যারা সত্যি দেশের ভালোর জন্য কাজ করতে চায়, তারা কখনও রাজনৈতিক ফলাফলের জন্য কাজ করে না।’

সালমান মুক্তাদির সতর্ক করে বলেন, ‘চারপাশ চিনুন। যারা আপনার আবেগকে ব্যবহার করে তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে চায়, তাদের ফাঁদে পা দেবেন না। তারা চায় আপনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ুন, আপনি অসহায় বোধ করুন। যাতে আপনি তাদেরই আপনার ত্রাণকর্তা হিসেবে ভাবেন। শুধু রাজনৈতিক সংগঠনের পেছনে দৌড়াবেন না। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত অপরাধ এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। তারা কোন দলে সেটা মুখ্য নয়।’

সালমানের কথায়, সব অপরাধীই রাজনৈতিক নয়। কিন্তু আমরা হয়তো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভুলে যাচ্ছি—যদি আমাদের লক্ষ্য হয় শুধু একটা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে যাওয়া, তাহলে আমরা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যাই। আমরা তখন প্রকৃত অর্থে অপরাধের বিরুদ্ধে নয়, বরং সেই দলের করা অপরাধের বিরুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থেকে যাই। অথচ বাংলাদেশে প্রতিটি অপরাধীর শাস্তি হওয়া উচিত। প্রতিটি অপরাধ দিনের আলোয় আসা উচিত। অন্যের রাজনৈতিক এজেন্ডার ফাঁদে পা দেবেন না। আপনার মানবতা এবং সহমর্মিতাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হতে দেবেন না।’

এরপর সোহাগের ঘটনা উল্লেখ করে অভিনেতা বলেন, সোহাগের ঘটনাটি ইন্টারনেটে আসতে দুই দিন লেগে গেছে। আপনি বলছেন ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বিএনপি, এনসিপি কেউই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কিছুই জানল না, কেউ কিছু বলল না, অবস্থান নিল না। বিএনপিকে তাদের লোকজনের কার্যকলাপের জন্য কেউ দায়ী করল না। অর্থাৎ এতো বড় বড় সংগঠন থাকার পরও ফেসবুকের কিশোর-তরুণরাই সবচেয়ে আগে তথ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক অপর ধ র র জন য আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ