শ্রবণ-বাকপ্রতিবন্ধী নারীকে সেলাই প্রশিক্ষণ দেবে ব্র্যাক ব্যাংক-বিএনএফডি
Published: 13th, July 2025 GMT
শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে ব্র্যাক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ডেফ (বিএনএফডি বা জাতীয় বধির সংস্থা) যৌথভাবে একটি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ নারীকে এই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের আওতার আনা হবে।
গত ৩০ জুন ঢাকার বিজয়নগরে বিএনএফডির প্রধান কার্যালয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ব্র্যাক ব্যাংক ও বিএনএফডি। ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশন ইকরাম কবীর ও বিএনএফডির প্রশাসক মো.
ব্র্যাক ব্যাংকের অন্যতম সিএসআর (সামাজিক দায়িত্ববোধ) উদ্যোগ ‘অপরাজেয় আমি’-এর অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে।
সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা প্রত্যেকে একটি করে সেলাই মেশিন পাবেন, যাতে তারা ঘরে বসেই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন অথবা পোশাক শিল্পে চাকরির সুযোগ পেতে পারেন। এর ফলে তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও সমাজে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন।
ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, ‘‘সত্যিকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি তখনই সম্ভব, যখন আমরা সমাজের সবচেয়ে উপেক্ষিত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারব। আমাদের এই অংশীদারিত্ব শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। এতে তারা নিজেরাই নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারবেন।’’
বিএনএফডির প্রশাসক মোশাররফ হোসেন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘এতে আমাদের শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী কমিউনিটি বাস্তব দক্ষতা ও আয়ের সুযোগ পাবে। ব্র্যাক ব্যাংককে ধন্যবাদ আমাদের সামর্থ্যকে বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। প্রকল্পটি দীর্ঘমেয়াদে এই কমিউনিটির ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের প্রতি এটি আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি।’’
ব্র্যাক ব্যাংক ও বিএনএফডি বিশ্বাস করে যে, তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য এই কর্মসূচিটি একটি দারুণ উপলক্ষ হতে পারে। এর মাধ্যমে তৈরি পোশাক খাতে প্রশিক্ষিত শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।
‘অপরাজেয় আমি’ উদ্যোগটি সামাজিক উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে ব্র্যাক ব্যাংকের অবিচল প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
একটি মূল্যবোধ-নির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক নিজেদের সিএসআর উদ্যোগগুলোকে এমনভাবে সাজায়, যেন সামাজিক সংকীর্ণতা এবং আর্থিক বাধা দূর করে প্রতিটি মানুষ সম্ভাবনার সঠিক বিকাশ ঘটাতে পারেন এবং একটি অর্থবহ জীবনযাপনের সুযোগ পান।
ঢাকা/রাজীব
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক