আমার ঠিক মনে নেই, কে আমাকে বইটি দিয়েছিলেন। হয়তো কোনো বন্ধু বা কোনো সহকর্মী কিংবা আমার কোনো শিক্ষার্থী। কিন্তু বইটির শিরোনাম দেখেই আমি চঞ্চল হয়ে উঠেছিলাম। বইটি বাংলাদেশের অন্যতম রূপকার এবং দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদের ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত লিখিত রোজনামচার ওপর ভিত্তি করে একটি অখণ্ড পুস্তক। সুতরাং বইটি আমি সাগ্রহ নিলাম।

বইটি পড়তে শুরু করে এর বিষয়বস্তুর বাইরে পাঁচটি বিষয় আমার মনোযোগ কাড়ল। এক, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ প্রতিদিনই তাঁর দিনপঞ্জিতে কিছু না কিছু লিখেছেন। এ সময়কালের মধ্যে দিনপঞ্জির কোনো পাতাই ফাঁকা যায়নি। তাঁর এই লেগে থাকার অধ্যবসায় ঈর্ষণীয় পর্যায়ের।

দুই, রোজনামচাগুলো তাজউদ্দীনের শৃঙ্খলামান্য মনের পরিচায়ক। তিনি তাঁর মনকে এমনভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেছিলেন যে প্রতিটি দিনের ঘটনা, তা যত সামান্যই হোক না কেন, তিনি তা রোজনামচায় লিপিবদ্ধ করেছেন।

তিন, তাজউদ্দীন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দৈনন্দিন ঘটনাগুলো রোজনামচায় লিপিবদ্ধ করেছেন। সেখানে লোকজনের নামধাম, জায়গার নাম, নানা ঘটনাসহ সব খুঁটিনাটিই লিখেছেন। প্রতিটি বিষয়কেই তিনি নিবিড়ভাবে দেখেছেন এবং ব্যক্ত করেছেন। হয়তো তিনি বাস্তব অবস্থারই বর্ণনা দিতে চেয়েছেন, কোনো গল্প ফাঁদতে চাননি।

চার, রোজনামচার ভাষা এত সহজ যে পড়তে পড়তে মনে হয় যেন পাশে বসে কেউ গল্প করছেন।

পাঁচ, পুস্তকে অন্তর্ভুক্ত রোজনামচাগুলো ইংরেজিতে লেখা, বাংলায় নয়।

রোজনামচাভিত্তিক বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। সেই কবে কিশোর বয়সে পড়েছিলাম শহীদ সাংবাদিক শহীদুল্লা কায়সারের ‘রাজবন্দীর রোজনামচা’। তবে রোজনামচাভিত্তিক বই পড়তে গিয়ে দেখেছি, এ ধরনের বইয়ের দুটো রকমফের আছে। কোনো কোনো রোজনামচা হয় তথ্যভিত্তিক; এই যেমন, কী ঘটল, কেন ঘটল এবং কেমন করে ঘটল। আমার পছন্দের নিরিখে এ জাতীয় দিনপঞ্জিগুলো বেশ নীরস এবং এগুলো আমি বড় একটা পছন্দ করি না।

তাজউদ্দীন আহমদ কি মার্ক্সবাদী ছিলেন? আমার নিজের মনে হয় যে প্রথাগত সংজ্ঞার দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি মার্ক্সবাদী ছিলেন না, কিন্তু চিন্তাচেতনার পরিপ্রেক্ষিতে মার্ক্সবাদের প্রতি তাঁর দুর্বলতা ছিল। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মার্ক্সবাদী বা কমিউনিস্ট নই, কিন্তু মার্ক্সীয় শিক্ষাকে আমি আমার জীবনধারায় অনুসরণ করি।’

অন্যদিকে কোনো কোনো রোজনামচা লেখা হয় গল্পের ভিত্তিতে। সেখানে পর্যবেক্ষণ থাকে, থাকে মানুষের মনের নানান ভাব। আমার পক্ষপাত এই দ্বিতীয় প্রকারের রোজনামচাগুলোর প্রতি। তবে বলা বাহুল্য যে জনাব তাজউদ্দীন আহমদের রোজনামচাগুলো প্রথম প্রকারের। সুতরাং আমি যখন তাঁর রোজনামচার বইটি পড়তে শুরু করি, তখন প্রথম দিকে বইটির বর্ণনা আমার কাছে যান্ত্রিক, বড় শুষ্ক এবং বেশ কিছুটা নীরস মনে হয়েছে। কিন্তু অতি দ্রুতই আমি তাঁর লেখার মধ্যে ডুবে যাই। আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে তাঁর লেখাগুলো শুধু ঘটনার বিবরণ নয়, বরং সেগুলো তখনকার সময়, সমাজ ও রাজনীতির সুস্পষ্ট প্রতিফলন। তবে যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, রোজনামচাগুলো এক নেতা, তাঁর চিন্তাচেতনা ও নিজস্ব বিবর্তনের জীবন্ত সাক্ষী।

এই রোজনামচা থেকে বুঝতে পারি যে জন্মভূমি আর তার মানুষদের জনাব তাজউদ্দীন আহমদ কতটা ভালোবাসতেন। রোজনামচার নানা লেখায় জনগণের জন্য তাঁর বিপুল ভালোবাসা নানাভাবে বেরিয়ে এসেছে। কখনো স্থানীয় পর্যায়ে, যেমন জন্মস্থান কাপাসিয়ার মানুষের জন্য, কখনো তাঁর রাজনৈতিক কর্মক্ষেত্র পুরান ঢাকার জন্য, কোনো কোনো সময় অবশ্য পুরো দেশের জন্য।

তাজউদ্দীনের লেখা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে জনগণের অধিকার, তাঁদের কণ্ঠস্বরের স্বাধীনতা, তাঁদের স্বায়ত্তশাসন ও তাঁদের মুক্তির জন্য তিনি ছিলেন এক অক্লান্ত কর্মী। ওই সব প্রশ্নে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন অনড় এবং আপসহীন। তিনি জনগণের জন্য একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতেন। যৌবনে যেসব দেশপ্রেমমূলক ধ্যান-ধারণা তাঁর মধ্যে কাজ করেছে, সেগুলোই বহু বছর পরে যখন তিনি বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁর প্রণীত বিভিন্ন অর্থনৈতিক বিষয়ে তাঁর চিন্তা-চেতনাকে প্রভাবিত ও উদ্বুদ্ধ করেছে।

তাঁর রোজনামচা থেকে এটা খুব পরিষ্কার যে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন বিপুলভাবে রাজনৈতিক মানুষ। রাজনীতি ছিল তাঁর রক্তে রক্তে। ব্যক্তিগত কিছু বিষয় ও ঘটনার উল্লেখ ভিন্ন পুরো রোজনামচাতেই তাঁর বন্ধু, সহকর্মী, চেনা-শোনা মানুষের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ এবং আলাপ-আলোচনার বিবরণই বেশি। তাঁরা সবাই কমবেশি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

মাঠপর্যায়ের সঙ্গে তাজউদ্দীনের সম্পৃক্ততা ছিল অত্যন্ত নিবিড়, ফলে স্থানীয় পর্যায়ের বাস্তবতার সঙ্গে তাঁর পরিচিতি ছিল খুবই গভীর। তৃণমূল পর্যায়ের রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সংযোগ ছিল খুবই শক্ত। তাঁর রোজনামচায় একটি লেখা আছে, যেখানে গ্রাম থেকে আসা এক ছাত্র কর্মীর সঙ্গে তিনি মুখোমুখি একটানা চার ঘণ্টা আলাপ করেছেন। রোজনামচায় তিনি লিখছেন, ‘এই আলোচনা আমাকে ঋদ্ধ করেছে।’

রাজনীতিকে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ ক্ষমতায় যাওয়ার পন্থা হিসেবে দেখেননি, গণমানুষের কল্যাণের উপকরণ হিসেবে দেখেছিলেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিষয়গুলোয় তিনি সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ ও নিরাবেগ ছিলেন। পুরান ঢাকায় নানা রাজনৈতিক সহকর্মীর সঙ্গে তাঁর আলাপ-আলোচনায় এ সত্য বেরিয়ে আসে।

রাজনীতিবিদ হিসেবে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ কথাসর্বস্ব রাজনীতিবিদ ছিলেন না, কিংবা তিনি বৈঠকখানার রাজনীতিবিদও ছিলেন না। তিনি ছিলেন রাজনীতির সক্রিয় কর্মী। তাঁর রোজনামচা থেকে পরিস্ফুট যে ভাষা আন্দোলনের সময় কীভাবে তিনি আন্দোলন-কৌশলগুলো নির্ধারণ করেছিলেন, কীভাবে তিনি সরকারি যন্ত্রের মোকাবিলার করার কৌশল প্রণয়ন করেছিলেন, কীভাবে তিনি তাঁর বন্ধুদের সংঘবদ্ধ করেছিলেন এবং কীভাবে তিনি নিজে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

তাজউদ্দীন আহমদ সারা জীবন যা করেছেন, ঠিক সেভাবেই ভাষা আন্দোলনের সময়ও তিনি গণমানুষের সঙ্গেই ছিলেন। ভাষা আন্দোলনকে তিনি শুধু বাঙালিদের সাংস্কৃতিক আত্মসত্তার আন্দোলন হিসেবে দেখেননি, তিনি এ আন্দোলনকে দেখেছেন বাঙালির স্বায়ত্তশাসন ও মুক্তির সংগ্রাম হিসেবেও। রোজনামচার লেখাগুলো জনাব তাজউদ্দীন আহমদকে শুধু রাজনীতিবিদ বা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করে না, সেই সঙ্গে তাঁকে তাঁর পারিবারিক অঙ্গনে একজন সংবেদনশীল স্বামী, স্নেহপ্রবণ পিতা এবং একজন নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসেবেও তুলে ধরে।

তাজউদ্দীন আহমদের পুরো রোজনামচায় সেই প্রশ্নের উত্তর আমি খুঁজে ফিরেছি যা তাঁর সম্পর্কে বারবার জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘তাজউদ্দীন আহমদ কি সমাজতন্ত্রী ছিলেন?’ তাঁর রোজনামচা পড়ে আমার মনে হয়েছে যে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন নিঃসন্দেহে, কিন্তু সামাজিক ন্যায্যতা, জনকল্যাণ, সাম্য ও সমতার প্রতি তাঁর দৃঢ় পক্ষপাত ছিল।

তাজউদ্দীন আহমদ কি মার্ক্সবাদী ছিলেন? আমার নিজের মনে হয় যে প্রথাগত সংজ্ঞার দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি মার্ক্সবাদী ছিলেন না, কিন্তু চিন্তাচেতনার পরিপ্রেক্ষিতে মার্ক্সবাদের প্রতি তাঁর দুর্বলতা ছিল। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মার্ক্সবাদী বা কমিউনিস্ট নই, কিন্তু মার্ক্সীয় শিক্ষাকে আমি আমার জীবনধারায় অনুসরণ করি।’ জনাব তাজউদ্দীন আহমদ মার্ক্সবাদী ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু তিনি অবশ্যই সমাজতন্ত্রী ছিলেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে যেসব অর্থনৈতিক নীতিমালা, কৌশল ও পরিকল্পনা অনুসৃত হয়েছিল, তার সবগুলোয় স্বাধীন ও মুক্ত বাংলাদেশের প্রথম অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদের চিন্তাধারার ছাপ ছিল।

রোজনামচাগুলো পড়ে আমার ধারণা হয়েছে যে জনাব তাজউদ্দীন আহমদ ইতিহাসকে অনুসরণ করেছেন, ইতিহাস তাঁকে টেনে নিয়ে যায়নি। এ প্রসঙ্গে তাঁর কথাগুলো প্রণিধানযোগ্য; ‘তুমি এমনভাবে কাজ করবে যাতে তুমি ইতিহাস গড়তে পারো, কিন্তু তোমাকে যেন সেই ইতিহাসের কোথাও খুঁজে না পাওয়া যায়’।

সেলিম জাহান ভূতপূর্ব পরিচালক, মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন দপ্তর এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ বিভাগ, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব ত জউদ দ ন আহমদ ত জউদ দ ন আহমদ ক ত জউদ দ ন আহমদ র র জন ত ব দ ম র ক সব দ দ ধ কর ছ কর ছ ল ন পর য য় র র জন ত ক কর ছ ন র জন য প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে: সালাহউদ্দিন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে কিছু সময়ের জন্য ওয়াকআউট করার পর আবারও আলোচনায় যোগ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন।

আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার ২০তম দিনে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে যেন আর কখনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ জন্ম নিতে না পারে, সে লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকেই প্রস্তাব ছিল, কেউ যেন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে না পারেন, সেটি গৃহীত হয়েছে। আমরা আরও প্রস্তাব দিয়েছি, নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরাই প্রস্তাব করেছি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তী সময়ে সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে, তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যেতে হবে। এটি গৃহীত হওয়া মানে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’

তবে এসব অগ্রগতির মধ্যেও নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি যেমন সংসদের কাছে, তেমনি জনগণের কাছেও রয়েছে। কিন্তু যদি কর্তৃত্ব না থাকে, কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়।’

সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী হতে হবে, দুর্বল নয়।’

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গঠনমূলক লক্ষ্য নিয়ে সংলাপে অংশ নিচ্ছে। তবে যেখানে মৌলিক দ্বিমত রয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা বা মতপার্থক্য প্রকাশ করাও গণতন্ত্রের ভাষা।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, এমন দাবি কেউ করেননি। দ্বিমত থাকবে, ভিন্নমত থাকবে, আর সেগুলোর মধ্য দিয়েই তো গণতন্ত্রের সংগ্রাম এগিয়ে যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি না যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কাউকে ঐকমত্যে বাধ্য করা উচিত। ঐকমত্যের অর্থই হচ্ছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পথচলা। বিএনপি অংশ না নিলে কীভাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে, সেটি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।’

বক্তব্য শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, সংলাপের পরবর্তী পর্যায়ে বিএনপি অংশ নেবে এবং ইতিবাচক আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।

আরও পড়ুনঐকমত্য কমিশনের বৈঠক: ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠায় হুড়োহুড়ি করে বের হলেন সবাই৫৪ মিনিট আগেবিএনপির ওয়াকআউট

কমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি। বেলা সাড়ে ১১টার পর বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, তাঁরা আলোচনায় অংশ নেবেন না।

পরে আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষে বলা হয়েছে, তারা আলোচনায় থাকবে না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে আলোচনা করা যাবে না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।

আজ আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।

আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও আইয়ুব মিয়া।

আরও পড়ুনজাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বিএনপির ওয়াক আউট, পরে যোগদান২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
  • জুলাই সনদের খসড়ায় ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের চিত্র নেই: ইসলামী আন্দোলন
  • কক্সবাজারের সোনাদিয়া উপকূলে ভেসে এল অজ্ঞাতনামার লাশ, এখনো নিখোঁজ অরিত্র
  • তাজউদ্দীন আহমদ দেশের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ
  • মানবাধিকার মিশন নিয়ে উদ্বেগ, আলোচনা ছাড়া সিদ্ধান্ত ন্যায়সংগত হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য নষ্ট হবে: সালাহউদ্দিন
  • দিনলিপির দর্পণে তাজউদ্দীন আহমদ
  • সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫% আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়নের প্রস্তাব বিএনপির
  • পিয়াইন নদীতে ভেসে উঠল নিখোঁজ পর্যটকের লাশ
  • দুর্নীতির অভিযোগে কেনাকাটা আটকে দিয়েছিলেন নাহিদ, তোড়জোড় ফয়েজ আহমদের