তাজউদ্দীন আহমদের ঐতিহাসিক ভূমিকা উপেক্ষিত থেকেছে: মাহ্ফুজ আনাম
Published: 23rd, July 2025 GMT
মুক্তিযুদ্ধে তাজউদ্দীন আহমদের ঐতিহাসিক ভূমিকা পরবর্তী সময়ে উপেক্ষার শিকার ছিল বলে মন্তব্য করেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম। তিনি বলেন, ‘এ জায়গায় আমরা ব্যক্তিগতভাবে, প্রতিষ্ঠানগতভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াত্বে আক্রান্ত।’
তাজউদ্দীন আহমদের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত এক স্মরণানুষ্ঠানে মাহ্ফুজ আনাম এ কথা বলেন। ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব যুদ্ধকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ জন্মশতবর্ষ স্মরণানুষ্ঠানে’র আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
অনুষ্ঠানে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘আমি স্মরণ করতে চাই, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কী ধরনের চেতনা ও আলোচনা আমরা করেছি, সেটা নিয়ে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার যাত্রা শুরু করে। এরপর আমাদের একটা বিরাট বিতর্ক তৈরি হলো বাকশাল নিয়ে। সব কাগজ বন্ধ করে দেওয়া হলো, সব দলকে নিষিদ্ধ করা হলো।’
এই পদক্ষেপকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যাত্রায় প্রথম ধাক্কা মন্তব্য করে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘এরপর আমরা দেখলাম বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যা। বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে আমরা কোনো দিনই ভাবি নাই আবার সেনাবাহিনী আসবে, তারা দেশ পরিচালনা করবে। আমরা ১৯৭৫ থেকে ’৯১ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেনাশাসনের মধ্যে থাকলাম।’
সেনাশাসকদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের বয়ান নিয়ন্ত্রণ করার একধরনের চেষ্টা ছিল উল্লেখ করে ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন, ‘সুষ্ঠু ও বস্তুনিষ্ঠ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমরা পেলাম না। এরপর আমরা গেলাম গণতন্ত্র (১৯৯১)। সেখানে বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের বয়ানকে সম্পূর্ণভাবে অন্যদিকে প্রবাহিত করার একটা উদ্যোগ দেখলাম। তারপর শেখ হাসিনার সরকারে সেটার বিপরীত যাত্রা দেখলাম।’
পরবর্তীকালে খালেদা জিয়ার সরকার ও সর্বশেষ হাসিনার সময়ে বস্তুনিষ্ঠ বয়ান তৈরি হয়নি মন্তব্য করে মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর উদ্যাপন করলাম, সেখানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটা একটা ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার দিকে চলে গেল। জনসাধারণ ও লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা—তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের প্রতি জাতির কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের ঘটনা ৫০ বছরের উদ্যাপনের মধ্যে দেখিনি।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন, ‘এ পুরো ধারাবাহিকতার মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদের যে ভূমিকা, সেটা বারবার বলতে পারেন যে উপেক্ষিত হলো। কোনো দিন আমরা ওইভাবে তাঁর অবদান (স্বীকারের বিষয়টি) পাইনি। তাজউদ্দীন আহমদ যে একজন মহান ব্যক্তিত্ব, তাঁর নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ, সততা ও নৈতিকতা—সবকিছু নিয়ে তিনি সত্যিকার অর্থে অনন্য ব্যক্তিত্ব।’
মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘আজকে যে জন্মশতবর্ষ খুব সীমিতভাবে উদ্যাপন হচ্ছে, আরও যে ব্যাপক আকারে উদ্যাপন হচ্ছে না; বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ, চিন্তক সংগঠন, তারাও যে ওনার জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন করছে না, এটাই প্রমাণ করে যে আমাদের ইতিহাসের প্রতি একটা অনীহা। এ জায়গায় আমরা ব্যক্তিগতভাবে, প্রতিষ্ঠানগতভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াত্বে আক্রান্ত।’
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ ও বঙ্গবন্ধুর যে একটা নৈকট্য ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা, পুরো বিষয়টি মুদ্রার এপিঠ ও ওপিঠের মতোই। জনগণকে জাগিয়ে তোলার মতো বঙ্গবন্ধুর যে বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষমতা, সেটা তাজউদ্দীন আহমদের ছিল না। তবে তাজউদ্দীনের দলকে সুসংগঠিত করার, গোছানোর অনন্য ক্ষমতা ছিল।
বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠানের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত জউদ দ ন আহমদ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন বলিউড অভিনেত্রী অঙ্কিতা লোখান্ডের স্বামী, ব্যবসায়ী ভিকি জৈন। হাতে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তার হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। প্রায় ৪৫টি সেলাই পড়েছে। ভিকি এখন আগের চেয়ে সুস্থ এবং হাসপাতাল থেকে বাড়িও ফিরেছেন।
হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে কু-নজর কাটাতে পূজা-আর্চনার আয়োজন করেন অভিনেত্রী অঙ্কিতা। ‘পবিত্র রিশতা’-খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে। তাই হয়তো এত বড় দুর্ঘটনা। কোনোমতে এবার প্রাণে বেঁচেছে ও।”
আরো পড়ুন:
‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’
‘রিয়েলিটি শোয়ের জন্য পুরুষের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাতে পারব না’
স্বামীর কু-নজর কাটানোর একটি ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করেছেন অঙ্কিতা। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিতা হাসপাতালে ভিকির জন্য চা বানাচ্ছেন, তখন ভিকিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। পরে দেখা যায়, অঙ্কিতা ভিকিকে বাড়িতে স্বাগত জানাচ্ছেন। অঙ্কিতা একটি রীতি পালন করছেন, যাতে কু-নজর থেকে রক্ষা পায় তার স্বামী।
অঙ্কিতার পরনে সবুজ রঙের সালোয়ার-কামিজ, মাথায় ওড়না। স্টিলের থালায় একটি গ্লাস ও রীতি পালনে ব্যবহৃত অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। এদিকে, ভিকি সাদা শার্ট ও কালো রঙের প্যান্ট পরে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে অঙ্কিতাকে প্রশ্ন করেছেন। অঙ্কিতা কি ‘ব্ল্যাক-ম্যাজিকে’ বিশ্বাসী? কেউ কেউ সরাসরি এ প্রশ্ন করেছেন অঙ্কিতাকে। অভিনেত্রীর ভাষ্য, “বড় ধকল পেরিয়েছে ও। তাই সবটা সামলে উঠতে অনেকটা সময় লাগবে।”
প্রয়াত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন অঙ্কিতা লোখান্ডে। ‘পবিত্র রিশতা’ ধারাবাহিকের সেটে তাদের প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। দীর্ঘ ছয় বছর একসঙ্গে ছিলেন। বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের ব্রেকআপ হয়। এরপর ভিকি জৈনর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান অঙ্কিতা; যা পরিণয় পেয়েছে।
রিয়েলিটি শো দিয়ে অঙ্কিতার শোবিজ অঙ্গনে পথচলা শুরু। এরপর ‘পবিত্র রিশতা’ টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করে খ্যাতি লাভ করেন তিনি। বড় পর্দাতেও অভিনয় করছেন। কঙ্গনা রাণৌত অভিনীত ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রেখেছেন এই অভিনেত্রী। টাইগার শ্রফ ও শ্রদ্ধা কাপুর অভিনীত ‘বাঘি-থ্রি’ সিনেমাতেও দেখা গেছে তাকে।
ঢাকা/শান্ত