রাশফোর্ডকে কেন ‘লুকিয়ে রেখেছে’ বার্সেলোনা
Published: 23rd, July 2025 GMT
মার্কাস রাশফোর্ডের ধারে খেলার বিষয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বার্সেলোনা সমঝোতায় পৌঁছেছে—এ খবর তিন দিন আগের। এরপর রোববার রাতেই ইংল্যান্ড থেকে স্পেনে গেছেন রাশফোর্ড—এটাও জানা গেছে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই। কারণ, বিমানে উঠে দুটি ছবি পোস্ট করেছিলেন রাশফোর্ড নিজেই।
কিন্তু এরপর প্রায় তিন দিন হতে চললেও আর কোনো খবর নেই রাশফোর্ড বা বার্সেলোনার। না আনুষ্ঠানিক চুক্তি সইয়ের কোনো খবর প্রকাশ করা হয়েছে, না মেডিকেল পরীক্ষা বা ক্লাবের অনুশীলন মাঠে রাশফোর্ডের উপস্থিতির কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। রাশফোর্ডকে নিয়ে বার্সেলোনার এমন ‘গোপনীয়তা’য় মাদ্রিদভিত্তিক ক্রীড়া দৈনিক ‘মার্কা’ শিরোনাম করেছে, ‘রাশফোর্ডকে লুকিয়ে রেখেছে বার্সেলোনা।’ প্রশ্ন হচ্ছে, রাশফোর্ডকে লুকিয়ে রাখার কারণ কী? প্রায় তিন দিন পার হয়ে গেলেও বার্সেলোনায় রাশফোর্ডের উপস্থিতি সম্পর্কে কেউ কিছু বলছে না কেন?
ইংল্যান্ড ও স্পেনের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, বার্সেলোনায় এক বছর ধারে কাটাবেন রাশফোর্ড। এ সময় তাঁর বেতন দেবে কাতালুনিয়ার ক্লাবটি। এক বছর পর রাশফোর্ডের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক মনে করলে বার্সেলোনা তাঁকে তিন কোটি ইউরোয় স্থায়ীভাবে কিনে নিতে পারবে। মার্কা জানিয়েছে, রোববার রাশফোর্ড বার্সেলোনা বিমানবন্দরে অবতরণের পর থেকেই তাঁকে নিয়ে লুকোচুরি খেলছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
রাশফোর্ডের বার্সেলোনায় পা রাখার ছবি তুলতে ও সুযোগ পেলে কথা বলার জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন সংবাদকর্মীরা। কিন্তু প্রাইভেট ফ্লাইট টার্মিনালে নামার পর বার্সেলোনা তাঁকে বিপরীত দিক দিয়ে বের করে নিয়ে যায়। কিছু সংবাদমাধ্যম সেখান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলেও পরিষ্কার কোনো ছবি তুলতে পারেনি। ক্লাবের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডল থেকেও পরে এ–সংক্রান্ত কোনো ছবি প্রকাশ করা হয়নি।
আরও পড়ুনঅনলাইনে সবচেয়ে বেশি হেনস্তার শিকার রাশফোর্ড, সাকা ও সালাহ১৯ জুন ২০২২পরদিন সোমবার সিউদাদ দেপোর্তিভোয় মেডিকেল পরীক্ষার জন্য যান রাশফোর্ড। এখানেও তাঁর কোনো ছবি তুলতে পারেননি সংবাদকর্মীরা, শুধু তাঁর গাড়ি প্রবেশের দৃশ্যই ধারণ করতে পেরেছেন তাঁরা। এ সময় গাড়ির জানালাও ছিল বন্ধ। সেদিনই বার্সেলোনা সভাপতি হুয়ান লাপোর্তার কার্যালয়ে রাশফোর্ড আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই করেন বলে বিভিন্ন সূত্রের খবর। কিন্তু এ নিয়েও বার্সেলোনা একদম চুপ।
সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে বার্সেলোনার অনুশীলন মাঠে যান রাশফোর্ড। দলের অন্যদের সঙ্গে অনুশীলন না করলেও ব্রিফিংয়ের সময় ছিলেন। এই পর্বেও সাংবাদিকদের উপস্থিতির সুযোগ ছিল না। এমনকি পরে বার্সেলোনা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডল থেকে অনুশীলনের যে ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করে, সেখানে কোথাও রাশফোর্ডের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
এক দশক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলেছেন মার্কাস রাশফোর্ড।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।