রাবির শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
Published: 25th, July 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন থেকে নেওয়া হবে লিখিত পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে মৌখিক পরীক্ষায় সিলেক্ট করা হবে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা.
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আবেদনকারীকে প্রথমে লিখিত পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রমে বিজ্ঞাপিত পদ সংখ্যার তিন গুণ বা তার বেশি আবেদনকারী মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হবে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর এবং মৌখিক পরীক্ষার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।
আরো পড়ুন:
কুয়েটের উপাচার্য বুয়েট অধ্যাপক মাকসুদ
রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাবেন মাইলস্টোন স্কুলের নিহত দুই শিক্ষক
তিনি আরো লিখেছেন, লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বোর্ডের সদস্যরা বোর্ডে উপস্থিত হয়ে হাতে লিখে বোর্ডের সভাপতির নিকট জমা দেন এবং সেগুলোর মধ্য থেকে বোর্ডের সভাপতি উপাচার্য প্রশ্ন মডারেশন করে চার/পাঁচটি প্রশ্ন ৪৫/৫০ মিনিট পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করেন। পরীক্ষা শেষে একজন সদস্য উত্তরপত্র কোডিং করেন এবং কোডিংকৃত উত্তরপত্র সব প্রশ্নকারী তার নিজ প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়ন করেন।
তিনি বলেন, “মূল্যায়ন শেষে সবার নম্বর যোগ করে মেধাক্রম ঠিক করে ডিকোডিং করে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত আবেদনকারীদের রোল নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে আশা করি যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষকতার সুযোগ লাভ করবেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় অনবদ্য ভূমিকা রাখবেন।”
ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হক লিখেছেন, “আমি এই লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে একমত নই। আমি এর আগেও বলেছি এটা বিভাগের শিক্ষকদের অপমান করার সামিল। বিভাগে এতগুলো কোর্স ভাইভা দিয়ে বিভাগের এতগুলো শিক্ষকের মূল্যায়নে যে ভালো করে সেই সে বিভাগের জন্য যোগ্য। বিভাগের ওপর আস্থা নেই, কি এমন যাদুবলে প্রশাসন লিখিত পরীক্ষায় মেধা যাচাই করবে!এটা দ্রুত বন্ধ করা উচিৎ।তবে ভাইভা/প্রেজেন্টশন নেওয়া যেতে পারে।”
গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. হারুনর রশিদ লিখেছেন, “মাননীয় প্রো-ভিসি স্যার, এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয়? ৫-৬ বছর প্রতিটি একাডেমিক পরীক্ষায় যে শিক্ষার্থী তার মেধার স্বাক্ষর রাখলেন, ৪৫ মিনিটের একটা যেনতেন পরীক্ষা নিয়ে সেখানে মেধাবী প্রমান করে ফেললেন আপনারা? বরং আপনারা যদি একাডেমিক রেজাল্টে ৮০ মার্কস রেখে লিখিত ১০ মার্কস ও ভাইভাতে ১০ মার্কস রেখে মোট ১০০ মার্কসে সিলেকশন দেন সেটাই হবে যথাযথ প্রক্রিয়া।”
তিনি আরো লিখেছেন, “আপনাদের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সমর্থন করতে পারলাম না। একাডেমিক রেজাল্টধারী ও গবেষণায় পারদর্শীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আমি হলফ করে বলতে পারি এত বড় নামকরা প্রফেসর হউক তাকে লিখিত পরীক্ষায় বসালে সেও পাস করতে পারবে না। কাজেই এই লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে একটা অশুভ প্লানকে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”
সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. জামিরুল ইসলাম লিখেছেন, “এটি অবশ্যই অতীতের চেয়ে অনেক ভাল একটি প্রক্রিয়া। তবে আমি রেজাল্টে ১৫; প্রবন্ধ/প্রকাশনায় ১০ মার্কস রেখে লিখিত ২৫ মার্কস; ভাইভাতে ২৫ মার্কস ও ডেমোন্ট্রেশন ক্লাসে ২৫ রেখে মোট ১০০ মার্কসে সিলেকশন দেওয়ার পক্ষপাতি। সেটাই হবে অপেক্ষাকৃত ভাল প্রক্রিয়া। এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হলেও ভাল প্রার্থী পাওয়ার সুযোগ হবে।”
“তবে বর্তমানে যা অনুশীলন করা হচ্ছে তা অতীতের চেয়ে ভাল। এক্কেবারে ভাল প্রক্রিয়ায় যাওয়া কঠিন। আশা করি প্রশাসন বিবেচনায় নিবে।”
ঢাকা/ফাহিম/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ ক পর ক ষ র ল খ ত পর ক ষ র পর ক ষ য় প রক র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন