পাল্টা শুল্কের প্রভাবে এ বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমতে পারে, এডিবির পূর্বাভাস
Published: 26th, July 2025 GMT
বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব পড়তে পারে—এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবি বলেছে, সদ্য শুরু হওয়া চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ধরা হয়েছে। এর পেছনে রপ্তানি ও শিল্প খাতের ধীরগতিই এর কারণ। এ ছাড়া রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব। তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কত হবে, তা বলা হয়নি।
সম্প্রতি প্রকাশিত এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক জুলাই সংস্করণে এ কথা বলা হয়েছে। এ সংস্কারে দেশভিত্তিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির পূর্বাভাস দেওয়া হয় না। মোটাদাগে বড় কয়েক দেশের তথ্যসহ আঞ্চলিক পর্যায়ে এসবের তথ্য দেওয়া হয়। অর্থনীতির গতি প্রকৃতির বিশ্লেষণ দেওয়া হয়।
গত এপ্রিল মাসে প্রকাশিত এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। পরে তা কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয় এবং আগামী ১ আগস্ট থেকে তা কার্যকর করার কথা। এ নিয়ে মার্কিন প্রশাসনে সঙ্গে দর-কষাকষি করছে বাংলাদেশ সরকার। নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপ হলে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশ করতে বাড়তি শুল্ক দিতে হবে। এ খাতের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, এতে পণ্যের রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমতে পারে, যা সার্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।
এদিকে মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে এডিবির জুলাই সংস্কার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। এর পেছনে বৈশ্বিক পণ্যমূল্যের স্থিতিশীলতা, কড়াকড়ি আর্থিক ও রাজস্বনীতি ভূমিকা রেখেছে। একই কারণে ২০২৬ অর্থবছরের পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
গত এপ্রিল মাসের এডিবির প্রতিবেদনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সার্বিক গড় মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ নেমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
তিন বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান আছে। তবে কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২২ সারের জুলাই মাসের পর সর্বনিম্ন। গত এক বছরের মধ্যে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে। পরের সাত মাস খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি ছিল। পরের পাঁচ মাসে তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র প রব দ ধ এড ব র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমতি ছাড়াই গাসিক কর্মকর্তা কিবরিয়ার বিদেশ যাত্রা
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন, তথ্য গোপন, অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর গত ১৫ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক শাহেদ আলম নামে এক ব্যক্তি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গোলাম কিবরিয়া সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তথ্য গোপন করে বেসরকারি পাসপোর্ট (নং A০১২৬৬৬১২) সংগ্রহ করেছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি একাধিকবার কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণ করেছেন।
অভিযোগকারী দাবি করেন, তিনি ২০২৪ ও ২০২৫ সালের বিভিন্ন সময়ে কানাডা সফর করেছেন, যার কোনো অনুমোদন তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নেননি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৯ জুন কানাডা সফরের সময় তিনি প্রায় ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গোলাম কিবরিয়া নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে কানাডায় সেকেন্ড হোম এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগ করেছেন। তার নামে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা পাচারের দুর্নীতির মামলাও চলমান রয়েছে। এমন অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি এখনো পদে বহাল থেকে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং যেকোনো সময় বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিযোগকারী বলেন, “তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া নিয়মিত বিদেশে যাচ্ছেন, যা সরকারি চাকরি বিধিমালার সরাসরি লঙ্ঘন এবং গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সূত্র জানায়, গোলাম কিবরিয়া গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা। তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট। তিনি দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। গাজীপুরবাসীর স্বার্থে এমন বেপরোয়া ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মুহাম্মদ সোহেল হাসান বলেন, “লিখিত অভিযোগটি প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হয়েছে। প্রশাসক মহোদয় বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। তথ্য গোপন করে বিদেশ যাত্রা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, প্রমাণ মিললে বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হবে।”
এ বিষয়ে জানতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে শোকজ করা হয়েছিল এবং তিনি জবাবও দিয়েছেন। শোকজের প্রতিবেদনটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।”
এ বিষয়ে গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রেজাউল/এস