মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 26th, July 2025 GMT
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী কুয়ালালামপুরে শনিবার হাজার হাজার মানুষ সমাবেশ করেছে। ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সংস্কার বাস্তবায়নে ব্যর্থতার অভিযোগে এই সমাবেশ হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিক্ষোভকারীরা বেশিরভাগই কালো টি-শার্ট এবং ব্যান্ডানা পরেছিলেন। তাদের মুখে ‘তুরুন আনোয়ার’ বা ‘আনোয়ার পদত্যাগ করুন’ স্লোগান ছিল। তারা কুয়ালালামপুরের কেন্দ্রস্থলে মিছিল করে এবং পরে শহরের স্বাধীনতা স্কোয়ারে শীর্ষ বিরোধী নেতাদের বক্তৃতা শুনতে একত্রিত হন। পুলিশের অনুমান, কমপক্ষে ১৮ হাজার মানুষ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
২০২২ সালের নভেম্বরে ক্ষমতা গ্রহণের আগে সংস্কারবাদী মঞ্চে প্রচারণা চালানো আনোয়ার, সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপের জন্য সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। তার পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে বর্ধিত বিক্রয় ও পরিষেবা কর এবং ভর্তুকি সমন্বয়। বিরোধীদের আশঙ্কা, প্রধানমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের ফলে ভোক্তা মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী অবশ্য চলতি সপ্তাহে ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের উদ্বেগ কমাতে নগদ অর্থ বিতরণ, দরিদ্র পরিবারের জন্য বর্ধিত সাহায্য এবং জ্বালানির দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছেন।
২৩ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী নুর শাহিরাহ লেমান জানান, তিনি উদ্বিগ্ন যে নতুন কর এবং বৃহৎ ব্যবসার উপর আরোপিত উচ্চ বিদ্যুতের শুল্ক অবশেষে গ্রাহকদের উপর চলে যাবে।
তিনি বলেন, “এই করগুলো উৎপাদনকারীর উপর আরোপ করা হয়, তাই এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খাদ্যের দামের উপর প্রভাব ফেলবে।”
সরকারের সহযোগী বেশ কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাহার এবং দেশের শীর্ষ বিচারকদের নিয়োগে সাম্প্রতিক বিলম্বের পর, আনোয়ার বিচারিক হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহের সম্মুখীন হয়েছেন। আনোয়ার বারবার আদালতে হস্তক্ষেপের কথা অস্বীকার করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ সমাবেশে যোগ দিয়েছিলে। তিনি আনোয়ারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিচার করার জন্য তার পদের অপব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন।
মাহাথির জনতাকে বলেন, “যারা নির্দোষ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, যারা অন্যায় করেছে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের সঙ্গে ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক চায় ভারত: প্রণয় ভার্মা
বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে একটি স্থিতিশীল, ইতিবাচক, গঠনমূলক, ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক চায় ভারত। যেখানে দুই দেশ পারস্পরিকভাবে লাভজনক সম্পর্ক বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে। আর দুই দেশের জনগণই হবে অংশীদারত্বের অংশীজন।
গত সোমবার ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে ২০২৫ সালে এনডিসি কোর্সে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
ভারতীয় হাইকমিশনার তাঁর বক্তৃতায় ভারতের পররাষ্ট্রনীতি ও উন্নয়ন কৌশল তুলে ধরেন। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা, বৈশ্বিক শাসনকাঠামোর সংস্কার এবং বৈশ্বিক দক্ষিণের স্বার্থ রক্ষায় ভারতের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততার পাশাপাশি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই ও দ্রুত জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টার বিষয়গুলো উল্লেখ করেন।
তিনি ভারতের পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার—‘প্রতিবেশী প্রথমে’, ‘পূর্বমুখী নীতি’, ‘মহাসাগর নীতি’ এবং ভারতের ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় রূপকল্পের আওতায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা এবং ভৌগোলিক ঘনিষ্ঠতা আরও জোরদার করা উচিত। যাতে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষাকে এমন সব সুযোগে পরিণত করবে, যা পারস্পরিকভাবে লাভজনক সহযোগিতা নিশ্চিত করবে।
ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশ বিমসটেক কাঠামোর আওতায় আঞ্চলিক সংহতির গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি। বিমসটেকের সদর দপ্তর ঢাকায় অবস্থিত এবং এটি দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে প্রবৃদ্ধির সুযোগগুলোর বাস্তবায়নে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে।