হাজারীবাগে এনসিপির সদস্যের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ
Published: 27th, July 2025 GMT
রাজধানীর হাজারীবাগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ করেছেন এক নারী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর পক্ষে হাজারীবাগ থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নিচ্ছে না বলে দুই দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চলছে। পুলিশ বলছে, এনসিপির এক নেতার বিরুদ্ধে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী নারীর ভগ্নিপতি মামলা করতে গতকাল শনিবার হাজারীবাগ থানায় যান। তিনি আজ রোববার প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, আট বছর ধরে ওই ছেলের সঙ্গে তাঁর শ্যালিকার প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত জুন মাসে তাঁর শ্যালিকাকে ধর্ষণ করেন। ওই ছেলের বাড়ি হাজারীবাগে হওয়ায় তিনি থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এনসিপির নেতা হওয়ায় থানা মামলা নেয়নি।
এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর বাড়ি হাজারীবাগে। কিন্তু যে বাসায় ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটা কামরাঙ্গীরচর এলাকার মধ্যে পড়েছে। তাই ভুক্তভোগীকে কামরাঙ্গীরচরে যেতে বলা হয়েছে। মামলা না নেওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, যে যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি হাজারীবাগ থানার এনসিপির নেতা বলে ভুক্তভোগী নারী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। এনসিপির কয়েকজন নেতা–কর্মী থানায় এসেছিলেন। তাঁদের দাবি, ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলেও তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু তাঁকে যেন ফাঁসানো না হয়। তবে এনসিপি সূত্র বলছে, হাজারীবাগে এনসিপির কোনো কমিটি হয়নি। যাঁরা নাগরিক কমিটিতে ছিলেন, তাঁরাই এনসিপির পরিচয় দিচ্ছেন।
কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি আমিনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ একটি জিডি করে ঘটনা তদন্ত করছে। তদন্তে ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে মামলা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক