একটি মাঠে বসে আছেন দুজন নারী–পুরুষ। হঠাৎ পেছন থেকে একটি হস্তীশাবক শুঁড় দিয়ে তাঁদের জড়িয়ে ধরে, যেন বহুদিন পর বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুর দেখা! এ ঘটনার একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে (ভাইরাল) হয়েছে।
গত রোববার অ্যামেইজিং নেচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তাদের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পোস্ট করে। মুহূর্তে সেটি ভাইরাল হয়। গতকাল সোমবার পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি মানুষ হস্তীশাবকের আদুরে ওই কাণ্ডের ভিডিওটি দেখেছেন।
তবে ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে, ভিডিওতে বা পোস্টে তার উল্লেখ করা হয়নি। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারী ও পুরুষ একটি মাঠে বসে আছেন, পাশে আছেন আরও কয়েকজন। একটি হস্তীশাবক এক পর্যায়ে পুরুষ লোকটির কাঁধের ওপর তার সামনের দুই পা তুলে দেয়, যেন তাঁর কাঁধে চড়তে চাইছে। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা আছে, ‘হস্তীশাবকেরা ভাবে, মানুষেরা খুব কিউট, তাই তাদের জড়িয়ে ধরতে চায়!’
হস্তীশাবকের এই কাণ্ডে ওই পুরুষ বা নারী একটুও বিচলিত হননি। বরং তাদের মন খুলে হাসতে দেখা যায়। হস্তীশাবকের জড়িয়ে ধরার বিষয়টি তাঁরা উপভোগ করেন।
ভিডিওটির নিচে অনেক মানুষ মজার মজার নানা মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘হস্তীশাবকেরা মনে করে মানুষ খুবই আদুরে এবং আমাদের জড়িয়ে ধরতে চায়।’ আরেকজন ব্যবহারকারীর মন্তব্য, ‘হস্তীশাবকটি নিজেই জানে না সে কতটা বড়, এটা সত্যিই খুব মিষ্টি।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘হস্তীশাবকেরা কি বুঝতে পারে তারা কত বিশাল?’ আরেক ব্যক্তির মন্তব্য, ‘আজকের দিনটা ভীষণ বিরক্তিকর মনে হচ্ছিল, তখনই এই ভিডিও এসে আমার মন ভালো করে দিল।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
বরগুনার বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়ে উঠেছেন লাইলী বেগম। বাবার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানান, তখন কন্যা হয়েও লাইলী সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। অভাব, ক্ষুধা আর সমাজের অবহেলা তার নিত্যসঙ্গী হয়। তারপরও থেমে যাননি লাইলী।
জীবনের চাকা ঘুরাতে, মাছ ধরা থেকে বর্গাচাষ—সবই করেছেন লাইলী। গত ২১ বছর ধরে নদী ও সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বরগুনা জেলার সরকারিভাবে নিবন্ধিত একমাত্র নারী জেলে তিনি। এই লাইলীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘উত্তরের বৈঠা’। এটি নির্মাণ করেছেন আনোয়ার হোসেন।
পরিচালক আনোয়ার হোসেন
আরো পড়ুন:
জসীমের কবরে রাতুলকে সমাহিত করে দুই ভাইয়ের আবেগঘন পোস্ট
নীনার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবরে কী বলেছিলেন ক্রিকেটার ভিভ?
এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন পরিচালক আনোয়ার হোসেন। তরুণ এই নির্মাতা বলেন, “এই চলচ্চিত্র শুধু একজন নারী জেলের গল্প নয়, এটি একজন মানুষের বেঁচে থাকার অদম্য চেষ্টা, একাকিত্বে গড়ে ওঠা সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। লাইলী বেগম যখন নদীতে জাল ছুঁড়ে দেন, সেই মুহূর্তে তিনি শুধু মাছ খোঁজেন না—তিনি খুঁজে ফেরেন নিজের অবস্থান, নিজের সম্মান, আর অস্তিত্বের উত্তর।”
লাইলীর চোখ দিয়ে বাস্তবতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা। তার ভাষায়, “এই ফিল্মে আমি কোনো কৃত্রিম কণ্ঠ বা নাটকীয় ভাষা ব্যবহার করিনি। কারণ আমি চেয়েছি দর্শক যেন লাইলীর চোখ দিয়েই এই বাস্তবতা দেখেন। তার নীরবতা, তার কথাবার্তা, তার দৃষ্টি—সবই যেন একেকটি দৃশ্যপট হয়ে ওঠে। একজন নির্মাতা হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিল শুধু একটি ফ্রেম তৈরি করে দেওয়া, বাকিটা বলে গেছেন লাইলী নিজেই—তার জীবনযাত্রা, নদী এবং অব্যক্ত যন্ত্রণা দিয়ে।”
‘লাইলী’-কে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান পরিচালক। তা জানিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ফিল্মটি তাদের জন্য, যারা নিঃশব্দে লড়াই করেন এবং যারা কখনো আলোয় আসেন না। এখানে আমি সংক্ষিপ্ত আকারে প্রামাণ্য চিত্রটি তৈরি করেছি, পূর্ণদৈর্ঘ্য আকারে তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে। আপনাদের সহযোগিতা ও আগ্রহ আমাকে অনুপ্রাণিত করবে। এই জীবন সংগ্রামের কথা বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চাই।”
সমাজের বাঁকা চোখ উপেক্ষা করে লাইলী প্রমাণ করেছেন, নারীর স্থান কেবল ঘরে নয়, সাহস আর সংগ্রামেও। লাইলী কেবল একজন নারী জেলে নন, এক অনুপ্রেরণার নাম। নারী চাইলে সব পারে—লাইলী তা নিঃশব্দে প্রমাণ করেছেন বলেও মনে করেন নির্মাতা।
ঢাকা/শান্ত