রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে মাচালং এলাকার নরেন্দ্র ত্রিপুরা পাড়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) আস্তানায় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে। এ সময় সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

আজ মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) পরিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাঘাইহাট জোনের একটি দল ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে নরেন্দ্র কারবারি ত্রিপুরা পাড়া নামের একটি এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ইউপিডিএফের সদস্যরা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোড়েন। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। এরপর তল্লাশি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনীর টহল দল ১টি সাবমেশিনগান, দেশি তৈরি ৩টি বন্দুক, ১টি এলজি, ১টি সাবমেশিনগানের ম্যাগাজিন, ১টি পোচ, ৭ রাউন্ড অ্যামুনেশন, ১৭টি গুলির খালি খোসা, ২৫টি বিভিন্ন লটের সাবমেশিনগানের খালি খোসা, ৪টি ওয়াকি–টকি, ১টি মটোরোলা সেট, ৪টি ওয়াকি–টকি চার্জার, ২টি ক্যামেরা, ১টি স্পাই ক্যামেরা সানগ্লাস, ১টি স্পাই ক্যামেরা ডিভাইস চার্জার, ৩টি পেনড্রাইভ, ইউপিডিএফ সংগঠনের ৪টি পতাকা, ইউপিডিএফ সংগঠনের ৫টি আর্মব্যান্ড এবং ১২টি বিভিন্ন প্রকারের বই উদ্ধার করা হয়।

অন্যদিকে আজ দুপুরে বাঘাইহাট জোনের অধিনায়ক লে.

কর্নেল মো. মাসুদ রানা অস্ত্র উদ্ধারের পর এক সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, এ অভিযান শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম সশস্ত্র দলের বিরুদ্ধে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার লক্ষ্যে দিন–রাত নিরলসভাবে সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

ইউপিডিএফ বলছে সাজানো নাটক

এদিকে সেনাবাহিনীর অভিযান ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাকে ইউপিডিএফ সাজানো নাটক উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, সাজেকে ইউপিডিএফের আস্তানায় সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুয়া, সাজানো এবং ইউপিডিএফকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানোর জঘন্য ষড়যন্ত্র।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইউপিডিএফের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এবং চলমান ধর্ষণবিরোধী ছাত্র-গণ আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরানোর মরিয়া চেষ্টা হিসেবে এভাবে একের পর এক গোলাগুলি ও অস্ত্র উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ করা হচ্ছে।

এ ছাড়া আজ ‘ভুয়া অস্ত্র উদ্ধারের’ প্রতিবাদে সাজেকের উজোবাজার এলাকায় একটি মিছিল করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।

ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।

নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।

আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।

আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি