গত ১ আগস্ট ভারতের ৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করেছে দেশটি। ফিচার ও নন-ফিচার—দুটি বিভাগে আলাদা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এ আসরে দুটো ভাগে বিজয়ীদের পদক প্রদান করা হয়ে থাকে। এক. স্বর্ণ কমল (গোল্ডেন লোটাস)। দুই. রজত কমল (সিলভার লোটাস)। স্বর্ণ কমল বিজয়ীদের প্রত্যেককে ৩ লাখ রুপি এবং রজত কমল বিজয়ীদের প্রত্যেককে ২ লাখ রুপি পুরস্কার দেওয়া হয়।

স্বর্ণ কমল বিজয়ীরা
সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে ‘টুয়েলভথ ফেল’ সিনেমা। এটি প্রযোজনা করেছে ভিসি ফিল্মস এলএলপি। এটি পরিচালনা করেছেন বিধু বিনোদ চোপড়া। সিনেমাটি স্বর্ণ কমল পুরস্কার পেয়েছে। এজন্য ৩ লাখ রুপি প্রদান করা হবে। সেরা বিনোদনমূলক চলচ্চিত্র ‘রকি আউর রানি কি প্রেম কাহানি’। এটি প্রযোজনা করেছে ধর্মা প্রোডাকশনস। পরিচালনা করেছেন করন জোহর। এ সিনেমাও স্বর্ণ কমল পুরস্কারের ৩ লাখ রুপি পাবে। 

সেরা পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন সুদীপ্ত সেন। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমার জন্য পুরস্কারটি পেয়েছেন তিনি। স্বর্ণ কমল পুরস্কারের অর্থমূল্য ৩ লাখ রুপি। সেরা নবাগত পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন আশীষ বেন্দে। মালায়ালাম ভাষার ‘আচমাপেলেট’ সিনেমার জন্য এই পুরস্কার পাচ্ছেন তিনি। এ নির্মাতাও ৩ লাখ রুপি পুরস্কার পাবেন।

আরো পড়ুন:

বন্ধুত্ব নিয়ে বলিউড সিনেমার সেরা ১০ সংলাপ

শাহরুখের স্বপ্নপূরণ: যারা পেলেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

রজত কমল বিজয়ীরা
সেরা অভিনেতা বিভাগে যৌথভাবে পুরস্কারটি পেয়েছেন শাহরুখ খান ও বিক্রান্ত ম্যাসি। রজত কমল পুরস্কারের অর্থমূল্য ২ লাখ রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা)। এই অর্থ সমানভাবে ভাগ করে নেবেন শাহরুখ-বিক্রান্ত। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন রানী মুখার্জি। পুরস্কার হিসেবে এ অভিনেত্রী পাবেন ২ লাখ রুপি। সেরা পার্শ্ব অভিনেতার (যৌথভাবে) পুরস্কার পেয়েছেন বিজয়রাঘবন (পুকালাম), মুথুপেত্তাই (পার্কিং)। শাহরুখ-বিক্রান্তের মতো তারাও ২ লাখ রুপি সমানভাবে ভাগ করে নেবেন। সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর (যৌথভাবে) পুরস্কার পেয়েছেন উর্বশী রাউতেলা (উল্লোজুক্কু), জানকি বোদিওয়ালা (ভাস)। ২ লাখ রুপি এই দুই অভিনেত্রী সমানভাবে ভাগ করে নেবেন। সেরা প্লেব্যাক গায়ক ও সেরা প্লেব্যাক গায়িকার পুরস্কার পেয়েছেন যথাক্রমে এস রোহিত, শিল্পা রাও। তারা প্রত্যেকে ২ লাখ রুপি করে অর্থমূল্য পাবেন। 

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান অভিনয় গুণে মুঠো মুঠো ভালোবাসা কুড়ালেও এটিই তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘জওয়ান’ সিনেমার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ৩৩ বছরের অধরা স্বপ্ন পূরণ হলো শাহরুখের।  

২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় শাহরুখ খানের ‘জওয়ান’ সিনেমা। এতে শাহরুখের বিপরীতে অভিনয় করেন দক্ষিণী সিনেমার লেডি সুপারস্টার নয়নতারা। এটি পরিচালনা করেন অ্যাটলি কুমার। বক্স অফিসে দারুণ সাড়া ফেলেছিল এটি।  

বিধু বিনোদ চোপড়া নির্মিত আলোচিত সিনেমা ‘টুয়েলভথ ফেল’। ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর চর্চায় পরিণত হয় সিনেমাটি। অল্প বাজেটে নির্মিত সিনেমাটি দারুণ ব্যবসা করে। সিনেমাটিতে বিক্রান্ত ম্যাসির অভিনয় ভীষণ প্রশংসা কুড়ায়। এ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন বিক্রান্ত। 

রানী মুখার্জি অভিনীত সিনেমা ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’। ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ মুক্তি পায় এটি। সাগরিকা ভট্টাচার্যর জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি। সিনেমাতে সাগরিতা চরিত্রে অভিনয় করেন রানী। এ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এই অভিনেত্রী। 

তথ্যসূত্র: ডিএনএ

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র প রস ক র প য় ছ ন স ন ম র জন য প রস ক র র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী