ঢাকার সরকারি সাতটি সরকারি কলেজ নিয়ে গঠিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ‘হাইব্রিড মডেলে’ পরিচালিত হবে। সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে পাঠদান করা হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ পাবেন।

সোমবার (৪ আগস্ট) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ঢাকা মহানগরীর সরকারি সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিতকরণের লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দীন খান।

সংবাদ সম্মেলনে ইউজিসি চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ,  সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসক ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

২ দফা দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে জবি শিক্ষার্থীরা

আওয়ামী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ছবিসহ তালিকা প্রদর্শন করবে রাবি ছাত্রদল

তানজীমউদ্দীন বলেন, ‘‘প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনুষদভিত্তিক পরিচালিত হয়। অনুষদভিত্তিক হওয়ায় অনুষদের অধীনে বিভাগগুলো থাকে। সেখানে বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ থাকে না। কিন্তু কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হবে স্কুলভিত্তিক। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে সবাই নন-মেজর বিষয়গুলো পড়বেন। ফলে তৃতীয় বর্ষ থেকে বিভাগ পরিবর্তন করতে পারবেন।’’ 

এ বছরের মধ্যেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধ্যাদেশ জারি হবে। তবে এবারের ভর্তি কার্যক্রম বিদ্যমান নিয়মেই হবে বলে তিনি জানান।

সাত কলেজের বর্তমান শিক্ষকদের কী হবে জানতে চাইলে অধ্যাপক তানজীমউদ্দীন খান বলেন, ‘‘কলেজের যে মৌলিক বৈশিষ্ট্য সেখানে আমরা পরিবর্তন আনছি না। কলেজ কলেজের জায়গায়ই থাকছে। কলেজের শিক্ষকরা কলেজেই থাকছেন। বিদ্যমান কাঠামোতে কলেজের শিক্ষকরাই পাঠদান করছেন। যখন বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো কলেজের কাঠামোর সঙ্গে একীভূত থাকবে না। কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসতে চান, যারা যোগ্য আছেন; তারা সাধারণ যে প্রক্রিয়া আছে, সেই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসবেন।’’ 
নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও পরিচালনা পদ্ধতি তুলে ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব মজিবর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা হবে ইন্টারডিসিপ্লিনারি ও হাইব্রিড ধরনের, যেখানে ৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইন এবং ৬০ শতাংশ অফলাইনে (সশরীরে) অনুষ্ঠিত হবে। সব ধরনের পরীক্ষা সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব শিক্ষার্থী প্রথম চারটি সেমিস্টারে নন-মেজর কোর্স অধ্যয়ন করবেন। পরবর্তী চার সেমিস্টার ডিসিপ্লিন অনুযায়ী মেজর কোর্স অধ্যয়ন করবেন। তবে পঞ্চম সেমিস্টারে শর্তপূরণ সাপেক্ষে শিক্ষার্থীরা ইচ্ছানুযায়ী ডিসিপ্লিন পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে ক্যাম্পাস পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না।

একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর বিষয়ে মজিবর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে একাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন প্রক্টর থাকবেন। এছাড়াও প্রতিটি কলেজে একজন পুরুষ এবং একজন নারী ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন। অর্থাৎ ৭ কলেজে সর্বমোট ১৪ জন ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন।

সাত কলেজের পাঁচটিতে আগের মতো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় চালু থাকবে জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত সচিব জানান, স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা টাইম, স্পেস ও রিসোর্স শেয়ারিং পদ্ধতিতে একই ক্যাম্পাস ব্যবহার করবেন। কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। প্রতি ডিসিপ্লিনে যৌক্তিকভাবে ছাত্র সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রথম বর্ষেই ল্যাপটপ ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে ও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ দেয়া হবে। কলেজগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়োগ করাদের বণ্টন করা হবে। বাজেট গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা হবে কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। প্রতিটি কলেজে আধুনিক মানসম্পন্ন লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া ও মেডিকেল সেন্টার ও পরিবহন ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আগের বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করবেন। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সময়মতো পরীক্ষা নেওয়া, রেজাল্ট দ্রুত প্রকাশ করা, সেশনজট কমাতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মো.

মজিবর রহমান।

ঢাকা মহানগরীর ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং সরকারি বাঙলা কলেজ দেশের সব সরকারি ডিগ্রি কলেজগুলোর সঙ্গে ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক নানা জটিল সংকটের সৃষ্টি হলে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বিদ্যমান সংকট নিরসনে ২০১৭ সালে সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির পর সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে সংকট আরো ঘনীভূত হওয়ায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে একটি নতুন স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে কলেজগুলোকে পরিচালনার দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের দাবির পরপরই গত বছরের ২৪ অক্টোবর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়। উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রুপরেখার প্রস্তাব সম্বলিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

ঢাকা/হাসান/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ব শ বব দ য কল জ র শ ক ষ স ত কল জ র এক ড ম ক পর চ ল ত ব যবস থ করব ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা

ভারতীয় সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী লক্ষ্মী মাঞ্চু। তার পরবর্তী সিনেমা ‘ঢাকসা’। এ সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে নানা ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৪৭ বছরের এই অভিনেত্রী। কয়েক দিন আগে গ্রেট অন্ধ্রকে সাক্ষাৎকার দেন লক্ষ্মী। এ আলাপচারিতার পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করায় লক্ষ্মী বলেন— “আপনার এত সাহস হয় কী করে!” 

মুম্বাইয়ে যাওয়ার ফলে কি আপনার পোশাকের স্টাইলে কোনো প্রভাব পড়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে লক্ষ্মী বলেন, “আমি আমেরিকাতে থেকেছি। সেখান থেকে হায়দরাবাদে, এখন মুম্বাইয়ে আছি। আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি নিজেকে এইভাবে উপস্থাপন করার জন্য। এই পরিশ্রম আমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে, যা আমাকে আমার মতো পোশাক পরতে উৎসাহ দেয়।” 

এরপর সাংবাদিক সরাসরি লক্ষ্মীর পোশাক নিয়ে প্রশ্ন করেন, জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, “আপনি কি একজন পুরুষকে একই প্রশ্ন করতেন? আপনার এত সাহস হয় কী করে! আপনি কি মহেশ বাবুকে বলতেন—‘আপনার তো এখন ৫০ বছর বয়স, তাহলে আপনি কেন জামা খুলে ছবি তুলছেন?’ তাহলে একজন নারীকে কেন এই প্রশ্ন? মানুষ আপনার এই প্রশ্ন থেকে কী শিখবে? একজন সাংবাদিক হিসেবে আপনার দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।” 

পরে সাংবাদিক স্বীকার করেন যে, এই ধরনের প্রশ্ন একজন অভিনেতাকে করতেন না। প্রশ্নটি করার কারণ ব্যাখ্যা করে সাংবাদিক জানান, তার পোশাক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের চর্চা চলছে, যার কারণে এই প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসা। 

লক্ষ্মী মাঞ্চুর অন্য পরিচয় তিনি তেলেগু সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা মোহন বাবুর কন্যা। ৫০ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন মোহন বাবু। ব্যক্তিগত জীবনে বিদ্যা দেবীর সঙ্গে ঘর বাঁধেন তিনি। এ সংসারে রয়েছে কন্যা লক্ষ্মী ও পুত্র বিষ্ণু মাঞ্চু। তারা দুজনেই অভিনয়শিল্পী।

তথ্যসূত্র: দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক অধ্যাপকের কাছেই অসহায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
  • চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী নির্বাচনে ব্যাডমিন্টন মার্কায় গনসংযোগে এগিয়ে মেরাজ
  • ফ্রান্সজুড়ে কৃচ্ছ্রতা বিরোধী বিক্ষোভ
  • চিমামান্দা এনগোজি আদিচির নারীবাদ
  • ভোররাতে রণক্ষেত্র: নরসিংদীতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৫
  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা