পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন হবে, সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ নেয় না। তেমনি পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে, সেটি নিশ্চয় ভারত সিদ্ধান্ত নেবে না।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এমন অভিমত দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

প্রায় তিন দশক পর ২৩ আগস্ট পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকায় আসার কথা।

বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ আছে। এ বিষয়টিকে আমলে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন হবে, সেটি আমি ডিসাইড করি না। একইভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে, সেটি নিশ্চয়ই ভারত ডিসাইড (সিদ্ধান্ত) করবে না।’

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকা সফর নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থের প্রশ্ন রয়েছে ও ব্যবসা-বাণিজ্য সব মিলিয়ে সম্পর্কের সবকিছুই আলোচনার টেবিলে থাকবে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক চায়। সম্পর্ক অস্বাভাবিকভাবে উচ্চতর স্তরে যাবে না। আবার ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখব না, এমন যে সিদ্ধান্তটি ছিল, সেটি থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে এসেছে। অন্য দশটি দেশের সঙ্গে যে রকম সম্পর্ক, পাকিস্তানের সঙ্গেও সে সম্পর্ক থাকবে বাংলাদেশের।

আরও পড়ুনপাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আসছেন, দৃষ্টি রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতায় ৭ ঘণ্টা আগে

১৯৭১–এর জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়া ও পাওনা (অবিভক্ত পাকিস্তানে ব্যাংক হিসাবে থাকা গচ্ছিত টাকা ও ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য বিদেশিদের পাঠানো ২০০ মিলিয়ন ডলার) ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসবে কি না, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি বিষয়ই আলোচনার টেবিলে থাকবে। যেটি ৫০ বছরে পারা যায়নি, সেটি ৬ মাসে পারা যাবে, এমন কোনো কথা নেই। বাংলাদেশ ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বৈঠক করবে। একটি ইস্যু আরেকটি ইস্যুকে আটকে রাখবে, সেটি আমরা চাই না।’

আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক, যে বাস্তবতা ভোলা যাবে না২৯ এপ্রিল ২০২৫

ইসহাক দারের ঢাকা সফরে বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান ত্রিদেশীয় উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা হবে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা-বেইজিং-ইসলামাবাদের মধ্যে কোনো জোট হয়নি। একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা অনানুষ্ঠানিক। কিছুদিন পর আরেকটি বৈঠক হতে পারবে না, বিষয়টি এমন নয়। বাংলাদেশ চায় এতে সদস্যসংখ্যা বাড়ুক, আরও দু-একটা দেশ আসুক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ