‘‘কোনো একজন ব‌্যক্তির জন‌্য ক্রিকেট থেমে থাকতে পারে না।’’ মোহাম্মদ মিঠুন কখনো ভাবেননি ক্রিকেট মাঠে দাঁড়িয়ে কখনো এমন কথা বলতে পারবেন। সঙ্গেও এ-ও যোগ করেন, ‘‘এর আগে কখনো কোয়াবের সঙ্গে বিশেষ করে বর্তমান খেলোয়াড় কখনো জড়িত ছিল না। কারণ আমরা অনুভব করতাম যারা এর আগে দায়িত্বে ছিল, তারা আমাদের জন্য কাজ করবে। এই আশায় আমরা শেষ ১৫ বছর, ২০ বছর বা ৩০ বছর তাদের অপেক্ষায় কাটিয়ে দিয়েছি বা তাদের ওপর নির্ভর করে আমরা লম্বা সময় ভুগেছি।’’

জাতীয় দলে খেলা এই ক্রিকেটারের আঙুল তুলেছেন সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দূর্জয়ের ওপর। যিনি ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ‌্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি ছিলেন ১৫ বছর। কোনো নির্বাচন, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতা, কোনো বিরুদ্ধ আওয়াজ ছাড়াই হট সিটে বসে অনায়েসে দায়িত্ব পালন করেছেন। যদিও ক্রিকেটারদের অভিযোগ, ‘‘কেবল সিটটাই দখল করে রেখেছিলেন তিনি। কোনো দায়িত্বই পালন করেননি।’’

শুধু মিঠুন নয়, বাকি সব ক্রিকেটারদের একই অভিযোগ। তাদের এক দাবি, নির্বাচন। সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটাররা, সাবেক ক্রিকেটাররা, পুলের ক্রিকেটাররা এবং বিভিন্ন লিগে খেলা প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বিভাগের খেলোয়াড় এক হয়েছিলেন কোয়াবের নতুন অফিসে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ মিরপুরেই তাদের স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছে। নতুন অফিসে চূড়ান্ত হয়েছে নির্বাচনের দিনক্ষণ।

আরো পড়ুন:

‘আমাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে, আমরা বিধ্বস্ত’

ক্রিকেটকে এখনো উপভোগ করছেন সাকিব

আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ক্রিকেটারদের সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোয়াবের আহবায়ক সেলিম শাহেদ। এছাড়া কোয়াবের কাঠামোতে আসতে যাচ্ছে বড় পরিবর্তন। দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আসন্ন নির্বাচনে থাকছে না সাধারণ সম্পাদক (সেক্রেটারি) পদ। নতুন করে গঠিত হতে যাওয়া কমিটিতে থাকবে একজন সভাপতি, একজন সিনিয়র সহ-সভাপতি, একজন সহ-সভাপতি এবং আটজন কার্যনির্বাহী সদস্য।

সেলিম শাহেদ গনমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘আমাদের আজকে একটা মিটিং ছিল কোয়াবের, যেই মিটিংয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমাদের ইলেকশন কবে হবে এবং ইলেকশনের প্রসেসটা কী হবে। আমরা সেপ্টেম্বর মাসের ৪ তারিখে ইলেকশনের ডেট ফাইনাল করেছি এবং ৪ তারিখের মধ্যে আমাদের বাকি যে সমস্ত ইলেকশন রিলেটেড কাজ সেগুলো কমপ্লিট করার চেষ্টা করবো। অর্থাৎ মেম্বারশিপ, প্লাস নমিনেশন ফর্ম কেনা, নমিনেশন ফর্ম জমা দেওয়া, এই সমস্ত জিনিসপত্র আমরা কমপ্লিট করার চেষ্টা করবো এবং ৪ তারিখে, অর্থাৎ ৪ঠা সেপ্টেম্বর, আমরা ইলেকশনের জন্য প্রসিড করবো।’’

তিন সদস‌্যের নির্বাচন কমিশনও গঠন করা হয়েছে। ইলেকশন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে রাখা হয়েছে ইফতেখার রহমান মিঠুকে। তার সাথে দুই সদস্য হিসেবে আছেন নাসির আহমেদ নাসু  ও হাবিবুল বাশার সুমন।

কোয়াবের সদস‌্য হওয়ার জন‌্য নতুন ক্রাইটেরিয়াও ঠিক করা হয়েছে। আজীবন সদস‌্যপদ আগে ছিল না। নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে। যেখানে জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়রা ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে এই পদ নিতে পারবেন। আর জাতীয় দলের বাইরের খেলোয়াড়দের গুনতে হবে ১ লাখ টাকা। ভোটাধিকার তারা পাবেন। লাগবে না কোনো বাৎসরিক ফি।

স্থায়ী সদস্যপদের ক্ষেত্রে, ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় দল, প্রথম শ্রেণি, লিস্ট ‘এ’ অথবা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলেছেন এমন ক্রিকেটাররা ৫ হাজার টাকা দিয়ে এই পদ নিতে পারবেন। এই ক্যাটাগরির সদস্যদের বাৎসরিক ফি দেওয়া লাগবে।

এর বাইরে রয়েছে সহযোগী সদস্যপদ। এই ক্যাটাগরির জন্য ২ হাজার টাকা ফি ও বাৎসরিক ফি ১ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই সদস্যরা ভোটের অধিকার পাবেন না।

ঢাকা/ইয়াসিন/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় দল আম দ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর শহরে আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ)–এর কাছ থেকে পালিয়ে আসা ক্ষুধার্ত এবং নির্যাতিত মানুষেরা বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতাগুলো বর্ণনা করছেন। তবে তাঁরা পালাতে পারলেও হাজার হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশের শহর ছিল রাজ্যটিতে সুদানি সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি। গত রোববার আরএসএফ বাহিনী এটির দখল নেয়। এরপর থেকে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা স্থানীয় মানুষের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এরই মধ্যে দারফুরে ধর্ষণ, মুক্তিপণ ও গণহত্যাসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা সামনে আসছে।

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ইসমাইল বলেন, ‘খার্তুমের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে পড়াশোনা করেছেন এমন একজন তরুণ সেখানে ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “ওকে হত্যা করো না”। এরপর তাঁরা আমার সঙ্গে থাকা সব তরুণ ও আমার বন্ধুদের হত্যা করেন।’

তাবিলা এলাকায় পালিয়ে আসা অন্য নাগরিকেরাও তাঁদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তেমনই একজন তাহানি হাসান। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই তাঁরা সেখানে হাজির হলেন। কোথা থেকে এলেন জানি না। ভিন্ন ভিন্ন বয়সী তিন তরুণকে দেখা গেল। তাঁরা আকাশে গুলি ছুড়লেন এবং বললেন, ‘থামো, থামো’। তাঁরা আরএসএফের পোশাকে ছিলেন।’

আলখেইর ইসমাইল নামের এক সুদানি তরুণ দারফুর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) দূরের তাবিলা শহরে পালিয়ে এসেছেন। আলখেইর বলেছেন, রোববার এল-ফাশের থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় ৩০০ জনকে আটক করে আরএসএফ। তিনিও ওই দলে ছিলেন। তবে আটককারীদের একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরিচিত ব্যক্তি হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

তাহানি হাসান বলেন, ‘এই তরুণেরা আমাদের বেধড়ক মারধর করেছেন। আমাদের পোশাক মাটিতে ছুড়ে ফেলেছেন। এমনকি আমি একজন নারী হওয়ার পরও আমাকে তল্লাশি করা হয়েছে। হামলাকারীরা সম্ভবত বয়সে আমার মেয়ের চেয়েও ছোট হবে।’

ফাতিমা আবদুলরহিম তাঁর নাতি–নাতনিদের সঙ্গে তাবিলাতে পালিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিন ধরে অনেক কষ্ট করে হেঁটে তাবিলাতে পৌঁছাতে পেরেছেন।

ফাতিমা বলেন, ‘তাঁরা (আরএসএফের সদস্যরা) ছেলেশিশুগুলোকে মারলেন এবং আমাদের সব সম্পদ কেড়ে নিলেন। আমাদের কিছুই রাখা হলো না। আমরা এখানে পৌঁছানোর পর জানতে পারলাম, আমাদের পর যেসব মেয়ে এসেছে, তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে আমাদের মেয়েরা বেঁচে গেছে।’

পালিয়ে আসা তরুণী রাওয়া আবদাল্লা বলেছেন, তাঁর বাবা নিখোঁজ।

গত বুধবার রাতে দেওয়া এক বক্তৃতায় আরএসএফের প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালো বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর যোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। হামদান ‘হেমেদতি’ নামেও পরিচিত।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানি সেনাদের সঙ্গে আরএসএফ সদস্যদের লড়াই চলছে। গত বৃহস্পতিবার আরএসএফ দাবি করে, নির্যাতনের অভিযোগে বেশ কয়েকজন যোদ্ধাকে আটক করেছে তারা।

তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরএসএফ সদস্যদের নিপীড়নের অভিযোগ তদন্তে বাহিনীটির দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরএসএফের একজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার এই ঘটনাগুলো ‘গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর দাবি, এল–ফাশেরে নিজেদের পরাজয় ও ক্ষয়ক্ষতি আড়াল করতে সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এ সংঘাত চলাকালে আরএসএফ ও সেনাবাহিনী—দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। সংঘাতকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। বিরাজ করছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের অবস্থা। পাশাপাশি কলেরা ও অন্যান্য প্রাণঘাতী রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।

দারফুর থেকে পালিয়ে আসা লোকজন তাবিলা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যালটে মামদানি, অদৃশ্য ‘প্রার্থী’ ট্রাম্প
  • দারফুরে ধর্ষণ-মুক্তিপণ-হত্যা: আরএসএফের ভয়াবহ নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন পালিয়ে আসা মানুষেরা
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স