গ্রিসের কৃষকরা ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জমির মালিকানা জাল করে ২ কোটি ২০ লাখেরও বেশি ইউরোর কৃষি ভর্তুকি আত্মসাৎ করেছেন। মঙ্গলবার একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, পুলিশি তদন্তের পর বিষয়টি সরকারকে নাড়া দিয়েছে।

জুলাই মাসে গ্রিক পুলিশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ভর্তুকি তত্ত্বাবধান এবং প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি সংস্থা OPEKEPE-এর অ্যাথেন্স অফিসে অভিযান চালিয়ে লাখ লাখ কৃষকের কর রেকর্ড জব্দ করেছে।

নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রী মিচালিস ক্রিসোচয়েডিস মঙ্গলবার টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আট লাখেরও বেশি আবেদনের মধ্যে ছয় হাজারেরও বেশি যাচাই-বাছাই করেছে। এরপর পুলিশ জানতে পেরেছে যে শত শত গ্রিক কৃষক কমপক্ষে ২ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার ইউরো মূল্যের ইইউ ভর্তুকি আত্মসাৎ করেছেন।

ক্রিসোচয়েডিস বলেছেন, “লোকেরা যখন জনসাধারণের অর্থের ওপর লোভ করে, তা রাষ্ট্রীয় হোক বা ইউরোপীয় তখন আমরা এটি সহ্য করতে পারি না এবং আমাদের সহ্য করা উচিত নয়। আমাদের কর্তব্য.

.. সব উপলব্ধ ব্যবস্থা সক্রিয় করা, অপরাধীদের প্রতিরোধ করা এবং যখনই প্রয়োজন হবে তদন্ত, শনাক্তকরণ এবং শাস্তি দেওয়া।”

মার্চ মাসে ইউরোপীয় প্রসিকিউটররা জানিয়েছিলেন, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তা প্রাপ্ত কয়েক ডজন গ্রিক চাষীকে মালিকানা বা চারণভূমির ইজারা দেওয়ার মিথ্যা ঘোষণা দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।

২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কৃষি ভর্তুকির অব্যবস্থাপনার জন্য ইইউ জুন মাসে গ্রিসের উপর তিন কোটি ৯২ লাখ ইউরো জরিমানা আরোপ করেছে।

এ ঘটনায় ২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী কিরিয়াকস মিতসোতাকিসের রক্ষণশীল সরকারের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। এই কেলেঙ্কারির কারণে চারজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন ভর ত ক ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী