যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েনের ঘটনায় হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে ট্রামবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন। তারা সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ‘উই আর অল ডিসি’ শিরোনামের এ মিছিলে অংশ নেন অনিবন্ধিত অভিবাসী ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমর্থকেরাও। তারা হাতে ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেন— “ট্রাম্পকে এখনই যেতে হবে”, “ডিসিকে মুক্ত করো”, “স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করো”। খবর রয়টার্সের। 

আরো পড়ুন:

সাত মাসে ১৪৫ অবৈধ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্পের শুল্ক বৈধতা নিয়ে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে আপিল

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে অ্যালেক্স লফার নামে একজন বলেন, “আমরা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরোধিতা করছি। আমাদের রাস্তায় ফেডারেল পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ডের কোনো জায়গা নেই।”

ট্রাম্প গত মাসে শহরে অপরাধ দমনের কথা বলে সেনা মোতায়েন করেছিলেন। তার দাবি ছিল, ‘আইনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে বিচার বিভাগের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে সহিংস অপরাধ গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। বর্তমানে ছয়টি রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্য থেকে আসা দুই হাজারের বেশি সেনা শহরে টহল দিচ্ছে। সেনাদের দায়িত্ব কবে শেষ হবে তা স্পষ্ট নয়, তবে ডিসির ন্যাশনাল গার্ডের কার্যাদেশ আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে ‘অপরাধ বৃদ্ধির কারণে জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েনের ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে গত ৪ সেপ্টেম্বর মামলা করেছে ওয়াশিংটন ডিসি।

মামলায় বলা হয়েছে, এই সন্য মোতায়েন অসাংবিধানিক এবং একাধিক ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করেছে। আদালতের কাছে এই মোতায়েন বন্ধে আদেশ জারির আবেদন জানানো হয়। 

ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রায়ান শোয়ালব এই পদক্ষেপকে ‘নজিরবিহীন, অপ্রয়োজনীয় এবং অবৈধ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, “ওয়াশিংটন ডিসিতে কোনো ‘অপরাধ বৃদ্ধির কারণে জরুরি অবস্থা’ নেই। বাস্তবে ডিসিতে সহিংস অপরাধের হার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপকভাবে কমেছে। ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালে ৩৫ শতাংশ কমে গেছে এবং চলতি বছর আরো ২৬ শতাংশ কমেছে।”

শনিবার বিক্ষোভ চলাকালে ট্রাম্প শহরে না থেকে নিজস্ব গলফ মাঠে সময় কাটান। তবে তিনি শিকাগোতেও সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন। ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমার সকালে নির্বাসনের গন্ধ ভালো লাগে’— যা ১৯৭৯ সালের যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের একটি সংলাপের ব্যঙ্গাত্মক রূপ। আরেক পোস্টে তিনি লিখেছেন, শিকাগো শিগগিরই বুঝতে পারবে কেন একে ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার বলা হয়।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র টন ড স ত অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা