ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক নারী টুম্পা দাস। ২০১৪ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়স থেকে মৃতদেহ সৎকার করার কাজ শুরু করেছিলেন। এরপরে চারপাশের মানুষগুলোকে বদলে যেতে দেখেন তিনি। মৃতদেহ সৎকার করার মতো পেশায় থাকার জন্য টুম্পার হাতের পানিও অনেকে পান করতে চাননি এমনকি চলতি পথে তাকে দেখলে অনেকে উল্টো পথে যেতে শুরু করেন। কিন্তু নিজের পেশা ছাড়েননি টুম্পা।
টুম্পা দাসের বাবা মৃতদেহ সৎকারের কাজ করতেন। মেয়েকে শ্মশানে আনতে চাইতেন না। টুম্পা দাস লুকিয়ে একদিন মৃতদেহ সৎকার করা দেখে এবং ভয় পেয়ে যায়। ধীরে ধীরে বুঝতে শেখে আর ভয় কাটিয়ে ওঠেন।
আরো পড়ুন:
গঙ্গার পানিচুক্তি নিয়ে মঙ্গলবার আলোচনায় বসছে বাংলাদেশ ও ভারত
সেরা অভিনেতা আল্লু, অভিনেত্রী রাশমিকা
টুম্পা দাস দেখতে শান্ত চেহারার। কিন্তু তার সাহসের অভাব নেই। যখন কেউ ভাবতেই পারেননি মেয়ে হয়ে এই কাজ করতে পারবেন, টুম্পা দাস সেই কাজটি করে দেখিয়েছেন। প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছেন টুম্পা।
পুরন্দরপুর মহাশ্মশানে কাজ করেন তিনি। কখনও কখনও লোকের অভাবে একাই ২৪ ঘণ্টা কাজ করেছেন। মাসের পর মাস কোনো ছুটিও পাননি তিনি।
টুম্পা বলেন, ‘‘লোক কম থাকলে আমি প্রথমে অফিসে রেজিস্ট্রেশনের কাজ করেছি আর তারপর চিতা সাজিয়েছি। মা দেখিয়ে দিয়েছে, ঠিক যেভাবে বাবা সাজাত।’’
টুম্পা দাস আরও বলেন, ‘‘এখন বুঝেছি, ভয় পেলে বাঁচতে পারব না। লোকের কথায় কান দিলে বাঁচতে পারব না। আমার ওপর সংসার নির্ভর করছে।’’
মাধ্যমিক পাশ করার পর প্রথমে টেইলরিং এবং পরে নার্সিং ট্রেনিং নিয়েছিলেন টুম্পা। বাবাকে হারিয়ে মাত্র তিন হাজার টাকা বেতনে মৃতদেহ সৎকারের কাজ শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘‘সত্যি বলতে কী বাবাকে হারানোর ছয়মাসের মধ্যে শ্মশানে কাজ করতে কষ্ট হতো। অন্যদের কাঁদতে দেখে খুব খারাপ লাগত। বাবাকে মিস করতাম।কিন্তু তাদের সামনে শক্ত থাকতাম।’’
ঐতিহাসিক ও পুরাণ বিশারদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী জানিয়েছেন, হিন্দু শাস্ত্রে কিন্তু নারীদের এই কাজ করতে বাধার কথা কোথাও লেখা নেই।
সূত্র: বিবিসি
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক জ করত ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের ক্ষুদে ফুটবলার জিসানের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্থানীয়রা ফুটবলে জিসানের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ বলে ডাকেন।
তারেক রহমানের পক্ষে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জিসানের গ্রামের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি জিসানের বাবা ও এলাকাবাসীকে এ খবরটি জানিয়ে আসেন।
উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের অটোরিকশাচালক জজ মিয়ার ছেলে জিসান। মাত্র ১০ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান ফুটবলারের অসাধারণ দক্ষতার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। স্থানীয় চর ঝাকালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সে।
কখনও এক পায়ে, কখনও দু’পায়ে, কখনও পিঠে ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কসরত করে জিসান। দেখে মনে হবে, ফুটবল যেনো তার কথা শুনছে। এসব কসরতের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
অনলাইনে জিসানের ফুটবল নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হন তারেক রহমান। তিনি জিসানের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে জিসানের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক।
জিসানকে উপহার হিসেবে বুট, জার্সি ও ফুটবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেন তিনি। এছাড়া জিসানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।
জিসানের ফুটবল খেলা নিজ চোখে দেখে মুগ্ধ আমিনুল হক বলেন, “জিসান ফুটবলে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। তারেক রহমান জিসানের প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিমাসে জিসানের লেখাপড়া, ফুটবল প্রশিক্ষণ ও পরিবারের ব্যয়ভারের জন্য টাকা পাঠানো হবে।”
জিসান জানায়, মোবাইলে ম্যারাডোনা, মেসি ও রোনালদোর খেলা দেখে নিজেই ফুটবলের নানা কৌশল শিখেছে। নিজ চেষ্টায় সে এসব রপ্ত করেছে।
জিসানের বাবা জজ মিয়া বলেন, “আমি বিশ্বাস করতাম, একদিন না একদিন কেউ না কেউ আমার ছেলের পাশে দাঁড়াবে। আজ আমার সেই বিশ্বাস পূর্ণ হয়েছে।”
ঢাকা/রুমন/এস