দুই ঘণ্টার বাজারে বিক্রি হয় ৩০ লাখ টাকার মাছ
Published: 15th, September 2025 GMT
মহাসড়কের পাশে বাজার। চলে ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত। এ দুই ঘণ্টাতেই সেখানে মাছ বিক্রি হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকার।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার এ বাজারে প্রতিদিন ইলিশ, রুই, কাতল, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, পাবদা, পুঁটি, চিতল, বোয়াল, শোল, টেংরা, কোরাল, শিং, কই, মাগুর, বাইন, খলিসা, গজাল ও চিংড়িসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে ওঠে এ পাইকারী বাজার। মাছের প্রাচুর্য থাকায় এ বাজারটি হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় ১০ বছর আগে কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া এলাকায় মহাসড়কের পাশে কয়েকজন আড়তদার মাছ বিক্রি শুরু করেন। ক্রমান্বয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকায় এ বাজারের নাম হয় ‘নাচনাপাড়া মডেল মৎস্য আড়ত’। সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মৎস্য খামারিরা কেউ ভ্যানে করে, কেউ মোটরসাইকেলে করে কেউবা অটোরিকশায় করে নদী, খাল, বিল, পুকুর ও ঘেরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে হাজির হন এ বাজারে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন পাইকাররা। নিলামের মাধ্যমে হয় মাছ বিক্রি। প্রতিদিন অন্তত ৪ মেট্রিক টন মাছ বিক্রি হয় এ বাজারে, যার দাম প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা, ন্যায্য মূল্যে মাছ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারা এবং খাজনা না থাকায় বাজারটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। তবে, বাজারের অবকাঠামো এখনো তেমন উন্নত নয়।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেছেন, নাচনাপাড়া আড়তে সাশ্রয়ী দামে চাহিদামতো মাছ কেনা যায়। তাই, গতকাল রাতেই কলাপাড়ায় এসেছি। সকালে এখান থেকে ইলিশ, রুই, টেংরা ও চিংড়ি মাছ কিনেছি। বিকেলে এসব মাছ আমাদের বাজারে বিক্রি করব। আশা করছি, আগের তুলনায় ভালো লাভ করতে পারব। তবে, এ বাজারের অবকাঠামো উন্নয়ন হওয়া দরকার।
লেবুখালী থেকে আসা ব্যবসায়ী হোসেন মিয়া বলেছেন, আমাদের ওখানে একটি বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য বেশকিছু রুই মাছের ওর্ডার আছে। রাস্তা ভালো থাকায় ফজরের আজানের সঙ্গে সঙ্গে এখানে এসেছি। বড় সাইজের বেশ কয়েকটি রুই মাছ পেয়েছি। এখন আমাদের ওখানের বাজারে বিক্রির জন্য কিছু চিংড়ি প্রয়োজন। সেগুলো কিনতে পারলেই চলে যাবো। আমাদের অঞ্চলের মধ্যে এ বাজারটি সবেচেয় বড়। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখানে প্রায়ই মাছ নেওয়ার জন্য আসি। এখানে কোনো খাজনা দেওয়া লাগে না। এ বাজারে বড় শেড থাকলে আরো ভালো হতো।
বিক্রেতা মাছুম খন্দকার বলেন, খুব ভোরে ঘের থেকে মাছ ধরে এখানে নিয়ে এসে বিক্রি করেছি। প্রতিদিনই এখানে মাছ বিক্রি করি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকার আসায় ভালো দামেই মাছ বিক্রি করা যায়। এ বাজারে বড় শেড এবং পাবলিক টয়লেট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
কলাপাড়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেছেন, এ অঞ্চলের মধ্যে মিঠার পানির মাছের সবচেয়ে বড় বাজার এটি। প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয় এ বাজারে। এতে ব্যাপক উপকৃত হন এ এলাকার মৎস্য খামারিরা। ভূমি জটিলতার কারণে বাজারটি আধুনিকায়ন করা সম্ভব হয়নি। প্রকল্প গ্রহণের জন্য নতুন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য় ৩০ ল খ ট ক আম দ র র জন য মৎস য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক