আগুন প্রহর
সাঁতরে কোথাও যাব—এই ভেবে নামিয়েছ
সময়-সমুদ্র-স্রোত। কিন্তু কোথায় যাব আমি?
গন্তব্যের কী নাম কী ঠিকানা—কিছুই তো বলোনি;
জানি না সাঁতার কাটার কোনো মন্ত্রও। আমাকে—
দৌলত দিয়েছ
বিদ্যে দিয়েছ
দিয়েছ হাড় ও হাভাত
এখন আর নিঃশর্ত নই আমি।
সাঁতরে কোথাও যাওয়ার—এই যে প্রকল্পের কাজ কল্পনায় নিয়েছ—
হয়েছ ঈশ্বর; আর শর্ত সাপেক্ষে আমিও তো ঈশ্বরকণা; অতএব
এমন বিন্দু বিন্দু নিরবচ্ছিন্ন স্থান–কাল–নেটওয়ার্ক—
এই সব আগুন প্রহর—
ডোবাও, পোড়াও এবং ভাসিয়ে দাও হাল
ও আমার প্রণয়-সমুদ্র-কাল.
কাল রাতের অস্থির ঈর্ষারা এখন আর নেই—
হয়তোবা উপায়ান্তর না পেয়ে শেষে
চোখের জলের দাগ
হয়েছ;
চোখের মধ্যেই নিজেকে ডুবিয়ে
নিভিয়ে দিয়েছ প্রপঞ্চ ও প্রহেলিকাদের।
এখন অনেকটাই স্নিগ্ধ,
অনেকটাই শান্ত ও নিরাপদ তোমার দৃষ্টিরা—
আমি দেখতে পাচ্ছি তোমার চোখের ধূপ ও ধুন
আমি দেখতে পাচ্ছি ছাই, পোড়া মন ও মনন
দেখতে পাচ্ছি বুকের বাঁ পাশ খুলে খুলে রাখা লাল টিপ, আর—
কালচে-নীল
পাথর
বিধ্বস্ত—পাগলপারা সব পাথর...
ভাঙো; ভেঙে ভেঙেই
ভ্রান্তি আনো।
এখন লগ্ন এমন; এমনই
বিরহে চেনো
আগুন শ্রাবণ।
ওঠো;
এ-ই–ভাবে—এভাবেই
বেড়ে ওঠো—
ভ্রান্তি ভেড়াও নিমগ্নের তানে
উষ্ণ হও
প্রবল হও
প্রগলভ হও পথে
এমন সুড়ঙ্গের পর পৃথিবী অচিন হবে
অগ্নির দ্বৈরথে।
আগুন পুড়ে যাচ্ছে
আধো অন্ধকারে আমার বুকের রক্তের সে আগুন—
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দূরে,
তোমাদের ঘুমের ঘোরে
তোমাদের রিপুর নিপুণ তালে
পুড়ে যাচ্ছে আগুন
পুড়ে যাচ্ছে আমার গোপন মৃত্যুর শ্বাস।
আমাকে ভালোবাসো।
ও আমার দম্ভ, ও আমার আত্মশ্লাঘার ঘাম—
বিদগ্ধ প্রজ্ঞার মতো এসো
দুর্দান্ত দুঃখেরা, এসো, আমার দুর্গত সূর্যের নিচে
নীলাভ সবুজ জ্বলজ্বলে জলের শব্দের সাথে
কেঁপে ওঠা অগণন ক্ষুধিত মুখের শব, বিষণ্ন অস্পৃশ্য মহাদেবও, এসো—
পুড়ে যাও; পুড়ে যাচ্ছে আমার বুকের রক্তের সে আগুন—আহ্!
সরীসৃপের মতো বুকে ভর দিয়ে
পুরো একটি শতাব্দী অতিক্রম করে এসেছি
এইখানে
একটি উদ্গ্রীব ফুলের প্রস্ফুটিত পল্লবে
ও আমার চোখ
ও আমার প্রিয়তম চোখের মণি
ফুলের নাম কখনো বেশ্যা হয় না—এই কথা জেনে
বুকের ভেতর শূন্যকে দেখো
আর দেখো
পৃথিবীর দোদুল্যমান মাচায় অদ্ভুত ও সুন্দর ওই ঝিঙে ফুল
আমার পাপ আমার প্রয়াণ—
আমাকে পান করতে দাও আকণ্ঠ।
এই পল্লবে
সরীসৃপের পিঠেই আজ গজিয়ে উঠুক ডানা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।