অনুষ্ঠান করে স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন স্বামী
Published: 16th, September 2025 GMT
এক একজনের প্রেমের প্রকাশ এক এক রকম। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মানুষ কখনও কখনও আত্মহত্যার মতো পথও বেছে নেয়। আবার কেউ কেউ নতুন মানুষটিকেই ধীরে ধীরে ভালোবেসে ফেলে। সংসারের মায়ায় পুরনো প্রেম ভুলে যায়, অথবা ভুলে থাকে। আবার কেউ কেউ নতুন সংসার জলাঞ্জলি দিয়ে ফিরে যায় পুরনো প্রেমিকের কাছেই। ভারতের উত্তরপ্রদেশের কামরৌলি থানার এক যুবক স্ত্রীর পুরনো প্রেমের কথা জানতে পেরে, নিজে উদ্যোগ নিয়ে স্ত্রীর ফের বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন।
চলতি বছরের ২ মার্চ বিয়ে হয়েছিল বাসিন্দা শিবশঙ্কর এবং রানিগঞ্জের উমার। মাত্র ছয় মাসের সংসার তাদের। ছয় মাস পরে এসে স্ত্রীকে তার প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শিবশঙ্কর। কারণ, উমা শিবশঙ্করের সঙ্গে সংসার পাতলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতেন বিশাল নামের তার প্রেমিকের সঙ্গে। শিবশঙ্কর প্রথম প্রথম স্ত্রীকে ওই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসার অনুরোধ করেছিলেন। তাতে কাজ হয়নি। বরং উমা জানিয়ে দেন, প্রেমিককে ভুলতে পারবেন না তিনি।
আরো পড়ুন:
দুই সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা বাংলাদেশি নারীকে সীমান্তে ফেলে পালাল ভারতীয় শ্বশুর
মুক্তির আগেই কত টাকা আয় করল ‘কানতারা টু’?
শিবশঙ্কর বুঝতে পারেন এই সংসার সুখের হবে ন। স্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী প্রেমিকের সঙ্গেই তার বিয়ে দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। যেমন ভাবা তেমনি কাজ। সম্প্রতি ‘আদিত্য বিড়়লা মন্দির’ এ প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রীর বিয়ে দেন যুবক। সাতপাক থেকে মালাবদল, বিয়ের যাবতীয় উপাচারও করেন। বিয়ের পরে কনের বাড়িতে যেমন মেয়েকে বিদায় জানানোর রীতি পালিত হয়, তেমনই স্ত্রীকে বিদায় দেন তার প্রথম স্বামী।
মন্দিরে উপস্থিত অন্যান্য দর্শনার্থী এবং ভক্ত এই বিয়ে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন। শিবশঙ্কর অবশ্য বলছেন,‘‘ ঘরে ঝামেলা পুষে রেখে লাভ নেই।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্থেটিক মেকআপ আর্টে সোনালী মিতুয়ার বাজিমাত
বাংলাদেশের মেকআপ আর্ট জগতে নীরবে নতুনত্ব যোগ করে যাচ্ছেন সোনালী মিতুয়া। তার শৈল্পিক ইলিউশন এবং বডি পেইন্টিংগুলো আন্তর্জাতিক মানের, যা দেখে চোখ ফেরানো দায়। বর্তমানে ফিনল্যান্ডে মেকআপের ওপর উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন এই শিল্পী, যার ক্যানভাসে শৈশবের প্রথম গন্ধ ছিল তেল রং আর থিনারের তীব্রতা। মেকআপ ব্যবহার করে তিনি যে ক্যানভাস তৈরি করেন-তা এক কথায় অনন্য, অসাধারণ।
সোনালী মিতুয়া কখনও তার মুখে ফুটে ওঠে ফাটল ধরা পৃথিবী, যেখান থেকে গজিয়ে ওঠে সবুজ লতা। কখনও দেখা যায় তার মুখটাই এক অর্ধেক যন্ত্র, অর্ধেক প্রকৃতি, যেন মানুষ আর মেশিনের মাঝের এক অদ্ভুত, কাব্যময় দ্বন্দ্ব।আর কখনও সেই মুখটাই অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, শুধু দেখা যায় এক ভয়ঙ্কর কালো গহ্বর — যেন মানুষের শূন্য আত্মা। এগুলো কোনো সিনেমার দৃশ্য না।এগুলো এক তরুণী মেকআপ আর্টিস্টের সৃষ্ট জীবন্ত শিল্পকর্ম।
আরো পড়ুন:
একা বাস করতে পারে যে পাখি
কেউ কটূক্তি করলে কী করবেন?
সোনালী মিতুয়ার মেকআপে একটা গল্প, একটা দর্শন, একটা গভীর বার্তা লুকিয়ে থাকে। যেখানে অধিকাংশ মানুষ মেকআপকে শুধু প্রসাধনের জগতে দেখে, সে সেখানে মেকআপকে তুলেছে এক উচ্চমাত্রার শিল্প হিসেবে। তার হাতে রঙ মানে—চামড়ার ওপরে নয়, বরং আত্মার ভাষা প্রকাশের এক মাধ্যম।
তার কাজে দেখা যায় প্রস্থেটিক মেকআপের প্রভাব— যেখানে মুখ বদলে যায়, গড়ে ওঠে নতুন রূপ, নতুন চরিত্র। এমন কৌশল একদিন তাকে সিনেমার পর্দায় প্রস্থেটিক আর্টিস্ট হিসেবে বড় জায়গায় নিয়ে যাবে—
এ কথা বলার জন্য বিশেষজ্ঞও হতে হয় না।
এই মেয়েটির সবচেয়ে বড় শক্তি তার কল্পনাশক্তি। সে মুখের ভেতরেই ফুটিয়ে তোলে গল্প—একদিকে প্রকৃতি, ফুল, প্রজাপতি; অন্যদিকে প্রযুক্তি, ধ্বংস আর শূন্যতা। দেখলে মনে হয়, এই দুইয়ের টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে তার শিল্পজগৎ।
বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য এই মেয়েটি এক অনুপ্রেরণা। সে প্রমাণ করছে—শিল্পের ভাষা যদি শক্ত হয়, তাহলে দেশের সীমা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছানো যায়। যেখানে মেকআপকে এখনো অনেকেই কেবল সাজের কাজ মনে করেন, এই মেয়েটি সেখানে দেখিয়েছে — মেকআপও হতে পারে দর্শন, প্রতিবাদ আর সৃষ্টির ক্যানভাস।
তিনি জানেন, প্রস্থেটিক আর্টে (বিশেষত কৃত্রিম অঙ্গ, ক্ষত বা ফ্যান্টাসি চরিত্র তৈরি) করা যায় দক্ষতার সাথে। বর্তমানে বাংলাদেশের সিনেমায় যেখানে প্রস্থেটিকের ব্যবহার খুবই সীমিত, সেখানে সোনালী মিতুয়ার মতো একজন আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিল্পী আছেন, তার হাতেই তৈরি হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাসের চরিত্রদের নিখুঁত রূপ, অথবা আমাদের ফ্যান্টাসি সিনেমার ভিনগ্রহের প্রাণী।
সোনালী মিতুয়ার কাজগুলো দেখলেই বোঝা যায়, তিনি মেকআপকে স্রেফ সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যম হিসেবে দেখেন না, বরং এটিকে একটি শক্তিশালী গল্প বলার হাতিয়ার মনে করেন।
একটা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মানুষ প্রকৃতির মাঝে ফাটল ধরা পাথরের মতো এক রূপ ধারণ করেছেন। সবুজ, হলুদ ও লালের মিশ্রণে চোখের অংশটি গভীর এবং রহস্যময়, আর ফাটলের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে আসা লতা-পাতা জীবনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি তার পরিবেশ-সচেতনতা এবং ফ্যান্টাসি আর্টের দক্ষতা প্রমাণ করে।
সাদাকালো স্কেচের মতো দেখতে এই মেকআপটি অত্যন্ত কঠিন এবং চোখে পড়ার মতো। মুখের প্রতিটি অংশে পেন্সিল বা চারকোল দিয়ে আঁকা হ্যাচিংয়ের মতো স্ট্রোকগুলো ত্রিমাত্রিক চেহারাটিকে দ্বিমাত্রিক কমিক-বুক বা নয়ার চলচ্চিত্রের চরিত্র হিসেবে ফুটিয়ে তুলেছে।
চোখ ও মুখের চারপাশে মাকড়সার জাল এবং ফুলা, রক্তবর্ণ চোখের পাপড়ি ভীতি ও কষ্টের এক শক্তিশালী অনুভূতি জাগায়। এটি বিশেষ করে হ্যালোইন বা হরর থিমের জন্য পারফেক্ট।
গভীর অন্ধকারে তোলা এই ছবিটি ‘অন্ধকার গহ্বর’ বা ‘কৃষ্ঞগহ্বর’ থিমের একটি চমকপ্রদ ইলিউশন মেকআপ। নিখুঁত কনট্যুরিং এবং রঙের ব্যবহারে মুখের এক অংশে যেন সত্যিই একটি ফাঁকা, গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা/লিপি