কৃষক হত্যার দায়ে ৪ জনের যাবজ্জীবন
Published: 17th, September 2025 GMT
সিরাজগঞ্জে আশরাফ আলী (৫৫) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার দায়ে চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অপর দুই আসামিকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ জেলা আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন আসামিদের উপস্থিতে এই রায় দেন। আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
শেরপুরে বেশি দামে সার বিক্রি: ২ ব্যবসায়ীকে সোয়া লাখ টাকা জরিমানা
নিহত আশরাফ আলী সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের চাঁদপাল গ্রামের মৃত ফজলার রহমানের ছেলে।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন– চাঁদপাল গ্রামের আবদুল খালেক শেখের ছেলে আবদুল আলিম, মোজাম শেখ, আবদুর রউফ ও মৃত জেসার উদ্দিন খলিফার ছেলে আবু বক্কার।
দুই বছরের সাজাপ্রাপ্তরা হলেন– একই গ্রামের আবদুল আলিম শেখের ছেলে আব্দুল্লাহ ও আবদুস সামাদের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আমির হামজা শেখ ও লিলি খাতুনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আবদুল আলিম শেখ গংদের সঙ্গে আশরাফ আলীর রাস্তা নির্মাণ কাজ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে আলিম গংরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লোহার রড, লাঠি, কাঠের বাটাম দিয়ে আশরাফ আলীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফ মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এই রায় ঘোষণা করেছেন।
ঢাকা/রাসেল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক