রাজধানী ঢাকায় ডাকাতি ও ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন একজন। তাঁর নাম রিয়াজ গোলদার (২৫)। আর ছিনতাইয়ে অভিযোগে গ্রেপ্তার অন্য ছয়জন হলেন মো. সিয়াম (২৩), মো.

রনি (১৯), মো. সুমন (২০), মো. ওসমান গনী (২১), মো. সোহেল (২২) ও মো. আলামিন (২১)।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলাবাগানে গরু ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকা থেকে রিয়াজ গোলদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে একটি মুঠোফোন ও পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

পুলিশ বলেছে, মেহেদী হাসান, আহমেদ শাহ, কাজী আনোয়ার হোসেন ও আবদুল লতিফ গরু ব্যবসায় জড়িত। গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে গাবতলী গরুর হাট থেকে তাঁরা ১১টি গরু কেনেন। পরে তাঁরা রাখালদের সরদার জাকিরের কাছে গরুগুলো বুঝিয়ে দেন। জাকির রাত দুইটার দিকে গাবতলী গরুর হাট থেকে পিকআপ ভ্যানে করে গরু ব্যবসায়ীদের কাছে গরুগুলো পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর শুক্রাবাদের এক গরু ব্যবসায়ীর কাছে দুটি গরু বুঝিয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে রাত সাড়ে চারটার দিকে কলাবাগান এলাকায় পিকআপ থেকে তিনটি গরু নামানোর সময় একদল ডাকাত চাপাতি দিয়ে হামলা চালায়। ডাকাতেরা গরু নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ডাকাতির সঙ্গে রিয়াজ গোলদার জড়িত।

অন্যদিকে ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে সিয়াম ও রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও ডাকাতির চারটি মামলা রয়েছে।

এ ছাড়া রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে থেকে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে সুমন, ওসমান গনী, সোহেল ও আলামিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি চাপাতি ও দুটি চাকু উদ্ধার করা হয়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ