নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আগুন লেগে পুড়ে গেছে ১২টি দোকান। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে শহরের গণপূর্ত ভবনের বিপরীতে মাইজদী-সোনাপুর মহাসড়কের পশ্চিম পাশে হকার্স মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন।

আজ রোববার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে গণপূর্ত ভবনের পশ্চিমে হকার্স মার্কেটের ভেতরে একটি ছাপাখানার পাশের একটি দোকানে প্রথম আগুন দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। খবর পেয়ে দ্রুত মাইজদী ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা আরও ১১টি ইউনিট। আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও আগুন নেভানোর জন্য এগিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

একই সময় পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুকের নির্দেশে সুধারাম থানা-পুলিশ ও জেলা পুলিশ লাইনস থেকে পুলিশের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে সহযোগিতা করেন। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল উদ্ধারে সহায়তা করেন।

আগুনে মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী খান স্টোর (ক্রোকারিজ), রিকশা অ্যান্ড সাইকেল মার্ট, পেন্সি প্রেস, লাকি স্টোর, এম এইচ টয়েস বেগ ওয়ার্ল্ড, পিজ্জা টাউন, অরুণ দন্ত চিকিৎসালয়, মডার্ন গ্যালারি, নূপুর মার্কেটের ভাই ভাই হোটেলসহ কমপক্ষে ১২টি দোকান পুড়ে গেছে। এ ছাড়া পুড়ে গেছে একটি মুঠোফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের টাওয়ারের যন্ত্রাংশও।

ক্ষতিগ্রস্ত খান স্টোরে কর্মরত মো.

সালভিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের দোকানের মালিকের নাম সালাউদ্দিন। আগুনে তাঁদের কোটি টাকার পণ্যের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোনো কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মাইজদী স্টেশনের ইনচার্জ আবদুল কাদের চৌধুরী বলেন, আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা গিয়ে কাজ শুরু করেন। এরপর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরও ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়। রাত একটার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১২টি দোকান পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত শেষে বলা যাবে।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লাহ আল ফারুক অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পাওয়ার পর তিনি সুধারাম থানা-পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠান। একই সঙ্গে জেলা পুলিশ লাইনস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা হয়। তিনি নিজেই ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিটকে আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তায় এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ