মোটরসাইকেল শোভযাত্রা করায় আহ্বায়ক-সদস্য সচিবকে শোকজ
Published: 13th, January 2025 GMT
বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কেন্দ্রের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করায় তাদের এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার দুপরে দেওয়া নোটিশে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রূহুল কবির রিজভী নোটিশে সই করেছেন।
ফারুক ও জিয়া সিকদার শোকজ নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তারা জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
জানা গেছে, আসন্ন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মহানগর বিএনপিতে বিরোধ তুঙ্গে। ৫ দিন ঢাকায় থাকার পর ফারুক ও জিয়া সিকদার শনিবার দুপুরে বরিশালে পৌঁছান। নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে অনুসারীরা প্রায় সহস্র মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে ফারুক ও জিয়াকে সদর রোড দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে দুই নেতা দলের প্রতিপক্ষ গ্রুপগুলোকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য দেন।
শোকজ নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা অমান্য করে আপনারা বরিশাল বিমানবন্দর থেকে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে বিশাল শোভাযাত্রাসহ নগরে প্রবেশ করেছেন। আপনাদের এহেন কার্যকলাপ দলীয় শৃঙ্খলার চরম বরখেলাপ। আপনাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব কেন্দ্রয় কার্যালয়ে দেবেন।
এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, দলে নির্দেশনা আছে শোডাউন করা যাবে না। বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব যেটা করেছেন তা সাধারণ মানুষ ভালভাবে নেয়নি। এজন্য বিএনপি তাদের শোকজ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বরিশাল নগর বিএনপির রাজনীতি প্রতিহিংসায় পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ নিজেরে পদবঞ্চিত দাবি করে লিফলেট বিতরণ করেছেন; এটাও দলের বিরোধিতা। অনেক বড় বড় নেতা মহানগর বিএনপিকে অস্থিতিশীল করতে কলকাঠি নাড়ছেন। দলীয় হাইকমান্ডের এ এসব কিছুই নজরে আছে।
উল্লেখ্য, বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে ২৫ নভেম্বর কেন্দ্রের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে মহানগরসহ বিভাগের ৮টি সাংগঠনিক কমিটির সম্মেলন করতে হবে। সম্ভাব্য কমিটিতে প্রত্যাশিত পদ নিয়ে মহানগর বিএনপির ৩টি গ্রুপ আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে অবস্থানে নিয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে।
কমিটির মধ্যে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরোধী গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন। কমিটি ও কমিটির বাইরে থাকা আরেকটি গ্রুপ বিগত কমিটির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একাট্টা হয়েছেন। ২০২১ সাল থেকে পদবঞ্চিতরা, যারা চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ারপন্থি হিসেবে পরিচিত তারাও সরব বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।