অনলাইন–ভ্যাট বৃদ্ধিতে উদ্বেগ জানিয়েছে ফরেন চেম্বার
Published: 13th, January 2025 GMT
সম্প্রতি শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংগঠন ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বা এফআইসিসিআই। একই সঙ্গে ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ উদ্বেগ জানায় ফরেন চেম্বার। সংগঠনটি বলেছে, অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই ভ্যাট–শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে একদিকে তাদের ব্যবসায় কার্যক্রম ও ভোক্তা পর্যায়ে বিরূপ প্রভাব পড়বে। অন্যদিকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যেতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের মোট বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ৯০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে ফরেন চেম্বার। তামাক, টেলিকম, জ্বালানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো উচ্চ রাজস্ব আয় হয়, এমন অনেক খাতে বিনিয়োগ রয়েছে বিদেশি কোম্পানিগুলোর। দেশের মোট রাজস্ব আয়ের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ হিস্যা রয়েছে তাদের। এসব অংশীজনের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া ভ্যাট ও অন্যান্য শুল্ক বাড়ানো ঠিক হয়নি বলে মনে করে ফরেন চেম্বার। সংগঠনটি বলেছে, বাড়তি ভ্যাট–শুল্কে দেশে ব্যবসা করার খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
ফরেন চেম্বার জানিয়েছে, বিভিন্ন খাতে ভ্যাটের হার বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে। যেমন প্রকিউরমেন্টে সাড়ে ৭ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ বা রেস্তোরাঁয় ৫ শতাংশ থেকে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এ ধরনের ভ্যাট বৃদ্ধি এখন ব্যবসার জন্য অন্যতম প্রধান উদ্বেগে পরিণত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভ্যাটের হার ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে কোম্পানিগুলো লোকসান কমাতে পণ্যের দাম বাড়াবে। তাতে খুচরা পর্যায়ে প্রায় আড়াই শতাংশ খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভোক্তারা পণ্য কেনা কমিয়ে দিলে সামগ্রিকভাবে সরকারের রাজস্ব কমবে। ফলে শুল্ক–ভ্যাট বাড়িয়ে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির কৌশল সম্ভবত অকার্যকর হবে।
ফরেন চেম্বার বলছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্যাট না বাড়িয়ে সরকারের উচিত হবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বিক্রি বাড়ানোর জন্য কৌশলগত সুযোগ করে দেওয়া। এতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজস্ব বাড়বে। এ ছাড়া একটি একক ভ্যাট হার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও জটিল ভ্যাট পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাইজেশনের পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।