ফেসবুকে পরিচয় সূত্রে দেখা, ঘোরাঘুরি শেষে আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণ
Published: 16th, January 2025 GMT
রাজধানীর ডেমরায় এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ডেমরা আমতলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— সোহাগ মিয়া, আল আমিন হোসেন ওরফে বাবু, মো. মিলন ও মো. সাজু।
ঢাকার ডেমরা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, মঙ্গলবার দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ডেমরা থানায় একটি মামলা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী ডেমরা এলাকার একটি প্যাকেজিং ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে সোহাগের সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিচয় ও পরবর্তীতে আলাপচারিতা। সোহাগ গত ১৩ জানুয়ারি বিকেলে তাকে দেখা করতে বলেন। তারা বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এক সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। একপর্যায়ে ডেমরার লালশাহ মাজার রোড ভার্জিন বেকারির গলির একটি পরিত্যক্ত কক্ষে নিয়ে ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে সোহাগ ও তার বন্ধুরা মিলে ভুক্তভোগী তরুণীকে ধর্ষণ করেন।
ওসি আরও জানান, মামলা তদন্তকালে ভুক্তভোগী তরুণীর জবানবন্দি পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া তরুণীর ডিএনএ পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী
গত মার্চে ৪৪২ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণ করা হয়েছে ১২৫ কন্যাসহ ১৬৩ জনকে। ১৮ কন্যাসহ ৩৬ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। দুই কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। দুই কন্যা ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া ৫৫ কন্যাসহ ৭০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাম্প্রতিক নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য জানান। এর আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে মোট ১৮৯ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৩০ কন্যাসহ ৪৮ জন। তার মধ্যে তিন কন্যাসহ ১১ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
জানুয়ারিতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে মোট ২০৫ নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৩ কন্যাসহ ৪৯ জন। তার মধ্যে ১৪ কন্যাসহ ২০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাসহ দুইজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া দুইজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
মডারেটরের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫ নম্বর ধারা জেন্ডার সমতা। এটি উপেক্ষা করা কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী আন্দোলনের অন্যতম দাবি অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন, রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, সংসদে এক-তৃতীয়াংশ আসন ও সরাসরি নির্বাচন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।
পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৫৪টি। এর আগে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে ১৩২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৯৯ কন্যাশিশু।