রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আবারো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রাখেন তারা। 

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, পোষ্য কোটা কোনো কোটা নয়, এটা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। তারা প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার ১ শতাংশ চান না, তারা ৫ শতাংশই বহাল চান। যতদিন না তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপাখানার কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “এ দাবি শুধু নির্দিষ্ট কিছু কর্মচারী, কর্মকর্তা বা শিক্ষকদের নয়, এটা আমাদের সবার দাবি। গত জুলাই বিপ্লবে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। যে স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা। কিন্তু এই বিপ্লবের পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত হয়ে ওঠেছে। যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হলো, সেখানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ-গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করা হলো।”

তিনি‌ আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি তিনটি ফুল হয়; তার একটা প্রশাসন, একটা কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আরেকটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার্থী। তাহলে আপনারা কেন আমাদের বুঝলেন না? কেন আলোচনা করলেন না? হটাৎ করে অবরুদ্ধ করে দিলেন। কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন আমরা পাশে ছিলাম। কিন্তু আমাদের সঙ্গে এমন কেন করলেন? আমরা আপনাদের সহায়ক শক্তি। আমাদের ছাড়া চলতে পারবেন না।”

সেন্ট্রাল সায়েন্স ল্যাবের উপ-রেজিস্ট্রার মো.

বখতিয়ার বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বলা হয়ে থাকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে একটা পরিবার। আবার আপনারা বলেন, পরিবার নিয়ে চলতে চাই। কিন্তু পরিবারের একটা অংশ বন্ধ হয়ে গেলে আপনারা চলতে পারবেন তো? তাই আপনারা আসেন আলোচনা করেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেন।”

তিনি বলেন, “আমরা বার বার বলে আসছি, এটা কোনো কোটা নয়, এটা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। যতদিন না আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় এতে বিভিন্ন বিভাগ, অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের প্রায় ৩ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ