মুসলিম না মুজরিম: ভারতে ঘৃণা যেভাবে বিনোদন হয়ে উঠেছে
Published: 20th, October 2025 GMT
আজকের ভারতের প্রতিটি সকাল শুরু হয় দুটি সমান্তরাল সংবাদচক্র দিয়ে। একটি হলো টেলিভিশনের পর্দায় প্রচারিত এবং সযত্নে সাজানো বিতর্কসভা, যেখানে পাকিস্তানবিরোধিতা, ‘হিন্দু গৌরব’ ও ‘নতুন ভারত’-এর নাট্যশৈলী নিয়ে আলোচনা হয়। অন্যটি প্রচারিত হয় না, কিন্তু বাস্তব; প্রতিদিনের মুসলমান নিপীড়ন, পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার, অপমান ও অমানবিকীকরণ।
এই দুইয়ের মাঝখানে লুকিয়ে আছে এক ভয়াবহ বার্তা: মুসলমানদের কষ্ট, হয় মুছে ফেলা হয়, নয়তো তা রূপ নেয় এক প্রদর্শনীতে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য হয়ে ওঠে সন্ধ্যার বিনোদন; মুসলমানরা বাধ্য হয় এমন এক জীবনে, যেখানে তারা যেন চিরকালীন অপরাধী—সব সময় অভিযুক্ত, কখনো শোনা যায় না তাদের কথা।
এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আজমগড়ে সাত বছর বয়সী এক মুসলিম শিশুকে হত্যা করা হয়েছিল। স্থানীয় সংবাদে এক ঝলকের মতো খবরটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু খুব দ্রুতই তা টিভির ‘প্রাইম টাইম’ থেকে হারিয়ে যায়—তার জায়গা নেয় ‘লাভ জিহাদ’, সীমান্ত উত্তেজনা কিংবা ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচের আগুনঝরা বিতর্ক।
এক মুসলিম শিশুর মৃত্যু জাতীয় ক্ষোভের ন্যারেটিভে খাপ খায়নি; বরং তা মিশে গেছে ‘স্বাভাবিক সহিংসতার’ নীরব আর্কাইভে। সমাজবিজ্ঞানী স্ট্যানলি কোহেন একে বলেছিলেন ‘স্টেট অব ডিনায়াল’—যে সমাজে নৃশংসতা গোপন নয়, বরং এতটাই দৈনন্দিন হয়ে যায় যে তা আর কাউকে নাড়া দেয় না। আজকের ভারত সেই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে।
কারণ, যেদিন ঘৃণাই হয়ে উঠবে জাতীয় বিনোদনের একমাত্র রূপ, সেদিন শেষ ক্রেডিট শুধু মুসলমানদের মৃতদেহের ওপর নয়, ভারতের প্রজাতন্ত্রের মৃত্যুর ওপর গড়াবে। আর ইতিহাস তখন জিজ্ঞেস করবে না তুমি হিন্দু না মুসলমান, ডানপন্থী না উদার; সে জিজ্ঞেস করবে কেবল একটাই—যে সমাজ নিজেকে সভ্য বলে গর্ব করত, কীভাবে তারা নিষ্ঠুরতাকে রসিকতায় আর নীরবতাকে সম্মতিতে রূপ দিল।তবে ঘৃণা শুধু নীরবতা নয়; এটি এক প্রদর্শনও বটে। কানপুরে যখন মুসলমানরা ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ লেখা প্ল্যাকার্ড তুলেছিল, পুলিশ তখন তাদের সুরক্ষা না দিয়ে ১ হাজার ৩০০ মুসলমানের বিরুদ্ধে এফআইআর করে এবং গণগ্রেপ্তার চালায়। ভালোবাসার প্রকাশই অপরাধে পরিণত হয়।
অথচ যখন হিন্দুত্ববাদী জনতা মহারাষ্ট্র বা মধ্যপ্রদেশে সমবেত হয়ে প্রকাশ্যে গণহত্যার ডাক দেয়, টেলিভিশন সাংবাদিকেরা হয় তাদের গৌরবান্বিত করে, নয়তো মুখ ফিরিয়ে নেয়। মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এখন একধরনের থিয়েটার—একটি চিত্রনাট্য, যেখানে মুসলমানরা চিরকাল অভিযুক্ত আর হিন্দুত্বের বাহিনী সভ্যতার রক্ষক হিসেবে অভিনয় করে।
এই বেছে নেওয়া দৃশ্যমানতা পরিকল্পিত। ইন্দোরে যখন মুসলিম ব্যবসায়ীদের রাতারাতি উচ্ছেদ করা হয়, সেটি ছিল এক অর্থনৈতিক ‘লিঞ্চিং’। পুরো পরিবার জীবিকা হারায়, শিশুরা স্কুল থেকে বাদ পড়ে, নারীরা খাবারের জন্য প্রতিবেশীর দ্বারে ভিক্ষা চায়। অথচ জাতীয় গণমাধ্যম একে দেখায় ‘আইনশৃঙ্খলার সমন্বয়’ হিসেবে, যেখানে মানবিক বিপর্যয়ের কথা প্রায় অনুল্লেখ্য। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় আনন্দ উদ্যাপন করে এবং মুসলমানদের উচ্ছেদকে ভাইরাল বিনোদনে পরিণত করে; যেটা হওয়া উচিত ছিল জাতীয় কেলেঙ্কারি, সেটাকে বানানো হয় ‘স্থানীয় উত্তেজনা’র স্বাভাবিক খবর।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই প্রদর্শনী সংস্কৃতির জীবন্ত প্রতীক। তাঁর সরকারি মঞ্চ থেকেই তিনি মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেন—তাদের বলেন ‘অনুপ্রবেশকারী’ ও ‘সন্ত্রাসের প্রতি সহানুভূতিশীল’। এরা প্রান্তিক কণ্ঠ নয়; এরা শাসক শ্রেণি। অথচ তথাকথিত বিরোধীরা প্রতিবাদ না করে নিজেদের হিন্দুত্বের হালকা সংস্করণ হাজির করে; প্রতিযোগিতা শুরু হয় কে বেশি ‘হিন্দু সমর্থক’ হতে পারে।
মুসলমানদের ভয় আর কণ্ঠহীনতা যেন এক রাজনৈতিক ঐকমত্যে পরিণত হয়েছে।
এর ফল কেবল শারীরিক নয়; তা মানসিক এবং অস্তিত্বগতও। আজকের ভারতে মুসলমান হয়ে বেঁচে থাকা মানে এক চিরস্থায়ী সন্দেহভাজন হিসেবে বেঁচে থাকা; মসজিদে নজরদারি, বাজারে সন্দেহ, শ্রেণিকক্ষে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে। প্রতি শুক্রবারের নামাজ এক ঝুঁকির নাম। আজানের ধ্বনি কারও কারও কাছে উসকানি, যদিও তা এক সম্প্রদায়ের হৃৎস্পন্দন।
উগান্ডায় জন্ম নেওয়া মার্কিন চিন্তাবিদ মাহমুদ মামদানি এই বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করার এক কাঠামো দিয়েছেন। তাঁর বিখ্যাত বই গুড মুসলিম, ব্যাড মুসলিম-এ তিনি ব্যাখ্যা করেন, রাষ্ট্র ও সমাজ কীভাবে মুসলমানদের দুই ভাগে ভাগ করে; ‘গ্রহণযোগ্য’ মুসলমান, যে চুপচাপ মানিয়ে নেয় আর ‘বিপজ্জনক’ মুসলমান, যে প্রতিবাদ করে বা মর্যাদা দাবি করে।
ভারতে এই বিভাজন প্রতিদিন অস্ত্রে পরিণত হচ্ছে। যে মুসলমান তার ধর্ম গোপন রাখে, অদৃশ্য হয়ে থাকে—সে সহনীয়। কিন্তু যে প্রকাশ্যে বলে ‘আমি মুহাম্মদকে ভালোবাসি’, যে সমান অধিকারের দাবি তোলে, যে মুছে ফেলা মানে না—সে মুহূর্তেই হয়ে যায় অপরাধী। মামদানি মনে করিয়ে দেন, বিষয়টি ধর্মতত্ত্ব নয়—এটি ক্ষমতার প্রশ্ন: কে বৈধতা নির্ধারণ করবে আর কে বাঁচবে সন্দেহের ছায়ায়।
এই কারণেই লিঞ্চিংয়ের ভিডিওগুলো হোয়াটসঅ্যাপে মিম হয়ে ছড়ায়, টিভি সঞ্চালকেরা ‘মুসলিম জনসংখ্যা বিস্ফোরণ’-এর ষড়যন্ত্র তত্ত্বে হাসেন আর জনতা দোকান জ্বালিয়ে দিয়ে হাসাহাসি করে। ঘৃণা এখন শুধু রাজনীতি নয়; এটি হয়ে উঠেছে ‘গণবিনোদন’; যখন নিষ্ঠুরতা রসিকতায় পরিণত হয়, অপমান হয়ে ওঠে ‘প্রাইমটাইম স্ক্রিপ্ট’, তখন গণতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদের সীমারেখা ইতিমধ্যে ভেঙে যায়।
ইতিহাস আমাদের সতর্ক করে: যে সমাজ সংখ্যালঘুদের কষ্টকে বিনোদনে পরিণত করে, তা শেষ পর্যন্ত নিজেই পচে যায়। নাৎসি সমাবেশে জার্মান উদারপন্থীদের নীরবতা, আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের লিঞ্চিংয়ের সময় শ্বেতাঙ্গদের উদাসীনতা কিংবা গাজায় বোমা বর্ষণের সময় ইসরায়েলিদের উল্লাস—সবই স্মরণ করিয়ে দেয়, ঘৃণার বিনোদন একদিন গোটা সমাজকেই গ্রাস করে। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়।
তাই প্রশ্নে ফিরে যাই: আমরা কি মুসলমান না কি মুজরিম (অপরাধী)? কেন আমাদের প্রতিদিন বিচার হতে হবে আর হত্যাকারীরা অবাধে ঘুরবে? কেন আমাদের সন্তানের মৃত্যু মুছে ফেলা হবে? এর উত্তর শুধু মুসলমানদের নয়; ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠদের দিতে হবে—তারা কি ঘৃণাকে তাদের জনপ্রিয় সিরিয়াল হিসেবে দেখতে থাকবে, নাকি অবশেষে সেই পর্দা বন্ধ করবে?
কারণ, যেদিন ঘৃণাই হয়ে উঠবে জাতীয় বিনোদনের একমাত্র রূপ, সেদিন শেষ ক্রেডিট শুধু মুসলমানদের মৃতদেহের ওপর নয়, ভারতের প্রজাতন্ত্রের মৃত্যুর ওপর গড়াবে। আর ইতিহাস তখন জিজ্ঞেস করবে না তুমি হিন্দু না মুসলমান, ডানপন্থী না উদার; সে জিজ্ঞেস করবে কেবল একটাই—যে সমাজ নিজেকে সভ্য বলে গর্ব করত, কীভাবে তারা নিষ্ঠুরতাকে রসিকতায় আর নীরবতাকে সম্মতিতে রূপ দিল।
আজকের প্রশ্ন তাই শুধু সহনশীলতা বা ধর্মনিরপেক্ষতার নয়; প্রশ্ন হলো—ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ কি এখনো তাদের প্রতিবেশীর মধ্যে মানুষটিকে চিনতে পারে? যখন মুসলমানকে মুজরিম বানিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়, তখন যদি তুমি হাততালি দাও, তবে আগামীকাল ঘুম ভাঙবে এমন এক দেশে, যা নিজেই তোমার কারাগারে পরিণত হয়েছে। তখন ‘ঘৃণার হাসি’ই হবে এই প্রজাতন্ত্রের শেষ শব্দ।
ইসমাইল সালাহুদ্দিন দিল্লি ও কলকাতাভিত্তিক লেখক ও গবেষক।
আল–জাজিরা থেকে নেওয়া
সংক্ষিপ্তকরণ ও অনুবাদ: মনজুরুল ইসলাম
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ জ ঞ স করব ম সলম ন প রক শ ন রবত আজক র র ওপর অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা-১ আসনে জামায়াতের চমক, চূড়ান্ত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী
প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে খুলনা-১ আসনে বড় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রাথমিক পর্যায়ে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করে সংগঠনটির হিন্দু শাখার নেতা কৃষ্ণ নন্দীকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের এ কৌশলের মধ্যে দিয়ে আসনটিতে নিজেদের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দলটি।
আরো পড়ুন:
‘আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি’
লটারির মাধ্যমে ৫২৭ থানার ওসি পদে রদবদল
এর আগে বুধবার বিকেলে খুলনা মহানগর জামায়াতের কার্যালয়ে জেলার কর্মী সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক।
জামায়াতের হয়ে প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কৃষ্ণ নন্দীও। জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসে এবারই প্রথম অন্য ধর্মের কোনো ব্যক্তিকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলো, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এক মাস ধরে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণ নন্দীর নাম রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে অবশেষে তাকে প্রার্থী করা হয়েছে।
ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীর গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকায়। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার ‘জামায়াতে ইসলাম সনাতনী‘র সভাপতি। এ উপজেলা ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রায় এক বছর ধরে গোলাম পরওয়ারের ডুমুরিয়া ও ফুলতলায় বিভিন্ন সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীর সক্রিয় উপস্থিতি দেখা গেছে। তার নেতৃত্বে হিন্দু নারী-পুরুষের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো।
মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষ্ণ নন্দী বলেছেন, ‘আমাকে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে জামায়াতের আমিরসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তারা আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমি তাদের নির্দেশনা পেয়েছি। এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করব।”
এর আগে এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন মাওলানা আবু ইউসুফ। তাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “বুধবার জামায়াতের আমির আমাদের দুজনকে বুকে বুক মিলিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই আমার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। জামায়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।”
ডুমুরিয়ার চুকনগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ নন্দী ২০০৫ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি এবং স্থানীয় সনাতন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে বেছে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “কঠোরভাবে আদর্শভিত্তিক জামায়াত হলো ন্যায় ও সততার দল। এখানে দুর্নীতি নেই, চাঁদাবাজি নেই, মাদক নেই। শান্তি-সমৃদ্ধি আনার দল বলে আমি জামায়াতকে বেছে নিয়েছি। ২০০৫ সাল থেকে এটি করছি, হঠাৎ নয়।”
আগের সরকারের আমলে কোণঠাসা ছিলেন বলে অভিযোগ তার। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দাপটে থাকা এই এলাকায় তিনি জামায়াত করার কারণে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন।
এর আগে খুলনা-১ আসনে মাওলানা মো. আবু ইউসুফকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল জামায়াত।
কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “গত ১ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান খুলনায় এলে আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। পরে আগের প্রার্থী মাওলানা ইউসুফকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে আমাকে প্রার্থী হিসেবে কাজ করতে বলা হয়। মাওলানা ইউসুফও আমার সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।”
খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুন্সী মঈনুল ইসলাম বলেন, “খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন হয়েছে। বাবু কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তে সবাই দাঁড়িপাল্লার হয়ে কাজ করবেন।”
সাবেক প্রার্থী মাওলানা আবু ইউসুফ বলেছেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে। আমি কৃষ্ণ নন্দীর বিজয়ের জন্য সর্বাত্মক কাজ করব। তার পক্ষে আমি প্রচারণা শুরু করেছি। যেহেতু আমাকেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে, সেহেতু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি যথাসম্ভব কাজ করব, ইনশাআল্লাহ।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক