সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার মূলে ছিল গোয়েন্দা সংস্থা: প্রেস সচিব
Published: 17th, January 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বিগত সময়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করার পেছনে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অন্যতম বড় ভূমিকা ছিল। সেই জায়গা থেকে সরে আসতে হবে। ভবিষ্যতে গণমাধ্যমে যাতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হস্তক্ষেপ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণমাধ্যম সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে গণমাধ্যম সংস্কারের ১৩ দফা প্রস্তাবনা পেশ করে ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম চাই’ নামের এক সংগঠন।
প্রেস সচিব বলেন, স্বৈরাচারের আমলে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার মূলে ছিল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি–ডিজিএফআই ও এনএসআই। ভবিষ্যতে যাতে ফ্যাসিবাদী সিস্টেম তৈরি না হয়, সে জন্য যেসব এডিটোরিয়াল ও রিপোর্টার ফ্যাসিবাদী বয়ান দিত তাদের বের করা উচিত।
শফিকুল আলম বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। তারা সারাদেশ পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দেবে। রিপোর্ট পেলে আমরা আলোচনায় বসব।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের যথার্থ বেতন না দেওয়ার বিষয়ে বেসিক ও ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করতে হবে। কপিরাইট ইনফোর্সমেন্ট খুবই জরুরি। এ বিষয়ে সব সাংবাদিকদের জোরালো কথা বলতে হবে। আপনি দুই মাস খেটে একটা নিউজ করলেন, সেটা অন্য কোনো নিউজ পোর্টাল এক সেকেন্ডে কপি করে ফেলল। আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর একটা ছবি তুললেন, সেটা একটা বড় পত্রিকায় আপনার অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করে ফেলল। আপনাকে কপিরাইট ইনফোর্সমেন্ট দিতে হবে। কারণ এটি আপনার আয়ের উৎস।
তিনি আরও বলেন, প্রেস কাউন্সিল অনেক কথা বলে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি অনেক কথা বলে, নোয়াব অনেক কথা বলে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো উচিত যারা এরকম চুরি করছে, তাদের বন্ধ করে দেওয়া। এই চুরি করার কারণে আপনার আমার বেতনটা কমে যাচ্ছে। কপিরাইট ইনফোর্সমেন্ট আমাদের দেশে নাই বলে সবাই চুরি করে।
প্রেস সচিব আরও বলেন, শেখ হাসিনার চোরতন্ত্রের অনেকগুলো পিলার ছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন নসরুল হামিদ বিপু। তাই রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনের নাম পরিবর্তন করা যায় কি না, সেটা আপনারা ভেবে দেখবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের যুদ্ধক্ষমতা সীমিত করতে চান মার্কিন সিনেটর
এক মার্কিন ডেমোক্র্যাট সিনেটর আজ সোমবার একটি আইন প্রস্তাব করেছেন, যাতে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক শক্তি ব্যবহার করতে না পারেন। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাত বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
ভার্জিনিয়ার সিনেটর টিম কেইন দীর্ঘদিন ধরেই হোয়াইট হাউসের কাছ থেকে যুদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা আবার কংগ্রেসের হাতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে আসছেন।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে, ২০২০ সালে, সিনেটর কেইন ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় ট্রাম্পের ক্ষমতা সীমিত করার জন্য একই ধরনের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। সেই প্রস্তাব সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদ—উভয় কক্ষেই পাস হয় এবং কিছু রিপাবলিকান সদস্যের সমর্থনও পেয়েছিল।
তবে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভেটো ঠেকানোর মতো প্রয়োজনীয় ভোট পাওয়া যায়নি বলে সেটি কার্যকর হয়নি।
আরও পড়ুনআরও ৩৬টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা বিবেচনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন১৯ ঘণ্টা আগেকেইন বলেছেন, তাঁর সর্বশেষ যুদ্ধক্ষমতাসম্পর্কিত প্রস্তাবটি এ বিষয় স্পষ্টভাবে তুলে ধরে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী যুদ্ধ ঘোষণা করার একমাত্র ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে, প্রেসিডেন্টের হাতে নয়। তিনি বলেন, ইরানের সঙ্গে যেকোনো ধরনের শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য অবশ্যই যুদ্ধ ঘোষণা বা সামরিক শক্তি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট অনুমোদন থাকতে হবে।
এক বিবৃতিতে সিনেটর কেইন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করা উপযুক্ত নয়, যদি না সেই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য একেবারেই অপরিহার্য হয়ে ওঠে। আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা দ্রুতই যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকটি অনন্তকাল চলা সংঘাতে জড়িয়ে ফেলতে পারে।’
মার্কিন আইনে যুদ্ধক্ষমতাসংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো ‘প্রিভিলেজড’ হিসেবে বিবেচিত হয়, অর্থাৎ সিনেট বাধ্য থাকবে বিষয়টি দ্রুত আলোচনায় আনতে এবং ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে।
গত শুক্রবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ইরানে হামলা চালায়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করে দেওয়া। অপর দিকে, ইরান, যাদের দাবি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে, তারা ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে এর জবাব দেয়।
উভয় দেশই তাদের হামলা অব্যাহত রেখেছে। ফলে বেসামরিক নাগরিকেরা নিহত ও আহত হচ্ছেন। এতে কানাডায় চলমান বিশ্বনেতাদের বৈঠকে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে যে এই দুই পুরোনো শত্রুর মধ্যে চলমান সবচেয়ে বড় লড়াই বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে।
ট্রাম্প একদিকে ইসরায়েলের হামলাকে প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে ইরানের সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র এ হামলায় অংশ নিয়েছে। তবে তিনি তেহরানকে সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে প্রতিশোধের পরিধি বাড়ানো উচিত হবে না।
গতকাল রোববার কানাডায় সম্মেলনের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি পরিস্থিতি শান্ত করতে কী করছেন? তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আশা করি একটা সমঝোতা হবে। আমার মনে হয় এখন সমঝোতার সময় এসেছে। তবে কখনো কখনো ওদের নিজের মধ্যে লড়ে নিতে হয়।’
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে ‘নো কিংস’ ব্যানারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ১৫ জুন ২০২৫