টাঙ্গাইলের মির্জাপু‌রে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী‌কে হত্যার অ‌ভি‌যোগ উঠে‌ছে স্বামীর বিরু‌দ্ধে। ‌সম্পত্তির লোভে সৈয়দা হুমাইরাকে (১৯) তার স্বামী হত্যা করেছেন বলে নিহতের বাবা দাবি করেছেন। 

শ‌নিবার (১৮ জানুয়া‌রি) বি‌কে‌লে টাঙ্গাইল জেনা‌রেল হাসপাতা‌ল ম‌র্গে হুমাইরার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হ‌য়। গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়া‌রি) সকা‌লে হুমাইরার মরদেহ মির্জাপুর হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান স্বামী রা‌কিব হাসান বলে জানায় পরিবার। 

নিহত হুমাইরা মির্জাপুর উপ‌জেলার ফ‌তেপুর ইউনিয়‌নের চামা‌রি গ্রামের সৈয়দ আহ‌মেদ হো‌সেন চৌধুরীর মে‌য়ে। তিনি একই এলাকার রা‌কিব হাসানের স্ত্রী। 

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে চোর সন্দেহে ১ ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা

দাদা বাড়ি বেড়াতে এসে খুন হলো শিশু সাফওয়ান

নিহতের প‌রিবারের অভিযোগ, প্রায় দেড় বছর আগে হুমাইরার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গ‌ড়ে তো‌লেন চামারি গ্রা‌মের বখা‌টে রা‌কিব। এক পর্যা‌য়ে জি‌ম্মি ক‌রে হুমাইরা‌কে বি‌য়ে ক‌রেন তিনি। হুমাইরার ভাই-বোন না থাকায় তার বাবার সম্প‌ত্তি নি‌জের না‌মে লি‌খে নিতে নিয়‌মিত চাপ দি‌তে শুরু করেন রাকিব। প্রায়ই সম্প‌ত্তির জন্য স্বামী ও স্ত্রীর ম‌ধ্যে ঝগড়া হতো। স্বামীর এমন অ‌নৈতিক চাওয়া এবং মান‌সিক ও শা‌রিরীক নির্যাত‌নের কথা পরিবার‌কে জানা‌তো হুমাইরা। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরেও তা‌কে চাপ দি‌তেন রাকিব। গতকাল শুক্রবার নির্যাত‌নের পর হুমাইরাকে শ্বাস‌রো‌ধে হত্যা করা হ‌য়। 

হুমাইরার বাবা সৈয়দ আহ‌মেদ হো‌সেন ব‌লেন, “সম্প‌ত্তির লো‌ভে মে‌য়ে‌কে কৌশ‌লে বি‌য়ে ক‌রে‌ রাকিব। ‌বি‌য়ের পরই সম্প‌ত্তির জন্য হুমাইরাকে মারধর কর‌তো সে। মে‌য়েটা‌কে শেষই ক‌রে দিল। এই ঘটনায় থানায় অ‌ভি‌যোগ‌ দেব। মে‌য়ে হত্যার বিচার চাই।”

হুমাইরার খালা‌তো ভাই মঈন আফ্রিদী ব‌লেন, “রা‌কিব এলাকায় নেশা‌খোর হি‌সে‌বে প‌রি‌চিত। কৌশ‌লে হুমাইরার সঙ্গে সম্পর্ক ক‌রে জি‌ম্মি ক‌রে তাকে বি‌য়ে ক‌রে‌ছিল। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরেও তা‌কে (হুমাইরা) হত্যার পর মর‌দেহ মির্জাপুর হাসপাতা‌লে রে‌খে পা‌লি‌য়ে‌ছেন তিনি (রাকিব)। বারবার তা‌কে হাসপাতা‌লে আসার কথা ব‌ল‌লেও তিনি আসে‌নি। অপরাধ ক‌রে‌ছেন, তাই পা‌লি‌য়ে‌ছেন।” 

টাঙ্গাইল জেনা‌রেল হাসপাতালের ফ‌রেন‌সিক বিভা‌গের সহকা‌রী অধ্যাপক র‌কিবুল হাসান খান ব‌লেন, “ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়ে‌ছে। খুব দ্রুতই প্রতি‌বেদন দেওয়া হ‌বে। নিহতের গলায় ছাড়া শরীরের অন্য স্থা‌নে কোনো আঘা‌তের চিহ্ন পাওয়া যায়‌নি।” 

মির্জাপুর থানার ও‌সি মোশারফ হোসেন ব‌লেন, “প‌রিবারের পক্ষে কোনো অ‌ভি‌যোগ না পাওয়ায় অপমৃত্যু মামলা দা‌য়ের হ‌য়েছে। অ‌ভি‌যোগ পাওয়া গে‌লে ও ময়নাতদন্ত ‌রিপোর্ট আসার পর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।” 

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’

এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ