জাবিতে পরীক্ষা দিতে আসা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা আটক
Published: 19th, January 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ১৫ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মীর সহায়তায় তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত অধিকাংশ ছাত্রদল নেতাকর্মীই পদবঞ্চিত ও সদ্য বহিষ্কৃত বলে জানা গেছে।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আটক ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম শরীফুল ইসলাম সোহান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম ব্যাচের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ও আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সম্মান শেষ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন শরীফুল ইসলাম সোহান। বেলা সাড়ে ১২টায় হলে প্রবেশ করে পরীক্ষায় বসেন। এ সময় খবর পেয়ে শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা সোহানকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার প্রতিবাদ এবং তাকে পুলিশে সোপর্দ করে বিচারের দাবি জানান।
তবে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে পরীক্ষা শেষ করার সুযোগ দিতে বললে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দাবির মুখে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে সোহানকে আটক করে নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, বিভাগের শিক্ষকদের ছত্রছায়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাচ্ছে। এর আগেও ৪৭তম ব্যাচের আরেক ছাত্রলীগ নেতা এভাবে পরীক্ষা দিয়ে চলে গেছে। বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়া পরীক্ষায় বসার সুযোগ নেই। প্রায় ৬ মাস পার হয়ে গেলেও এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার করতে পারেনি প্রশাসন। এসব হামলাকারীদের বিচারের আওতায় না আনলে শিক্ষার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।
ঘটনাস্থলের উপস্থিত ৪৬ ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আহমেদ বলেন, “আমরা খবর পাই ৪৯তম ব্যাচের ছাত্রলীগ কর্মী সোহান বিভাগের পরীক্ষা দিতে এসেছে। বিভিন্ন হলে তদন্ত কমিটির দেখানো ফুটেজ থেকে ১৫ জুলাই রাতে সে হামলায় অংশগ্রহণ করেছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা তার বিভাগে যাই এবং বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারকে জানাই, তার মতো এমন প্রত্যক্ষ হামলাকারীর জেলে থাকার কথা, সে কিভাবে পরীক্ষা দিতে আসে? তার ভিডিও ফুটেজও আছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, পরীক্ষার দেওয়ার সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কিত। এখানে হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সাক্ষর দেওয়া লাগে। তারা কিভাবে এ রকম একজন হামলাকারীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিল? এটা আমাদের বোধগম্য নয়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, “কে পরীক্ষা দিতে পারবে, কে দিতে পারবে না, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেনি। ছাত্রলীগ কর্মীদের জন্যও বলা হয়নি, কারা পরীক্ষা দিতে পারবে না। আর আমি ব্যাক্তিগতভাবেও সবাইকে চিনি না এবং জানি না, কারা হামলার সঙ্গে জড়িত। সব হামলাকারীকে তো আর একসঙ্গে মনে রাখা যায় না।”
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর ম ছ ত রদল উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।
আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’
আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’
এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।