দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল রোববার প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন। পাস করেছেন ৬০ হাজার ৯৫ জন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন সুশোভন বাছাড়। এছাড়া জাতীয় মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন একঝাঁক শিক্ষার্থী।

রোববার বিকেল ৪টায় এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় শীর্ষ ১০ জনের তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সুশোভন বাছাড়। তার প্রাপ্ত নম্বর ৯০.

৭৫। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন চট্টগ্রাম কলেজের মো. সানজিদ অপূর্ব বিন সিরাজ, ভর্তি পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত স্কোর ৯০.৫০।

তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন শেখ আব্দুল ওহাব মডেল কলেজের শেখ তাসনিম ফেরদাউস। তিনি পেয়েছেন ৮৯.৫০ নম্বর। চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের মো. আবুল ফাইয়াজ। পঞ্চম স্থান অধিকার করেছেন হলিক্রস কলেজের সুমাইয়া জাহান।

মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছেন নটরডেম কলেজের মো. আফতাব আহমেদ জয়। সপ্তম স্থান অধিকার করেছেন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. মারহামাতুল করিম। অষ্টম স্থান অধিকার করেছেন নটরডেম কলেজের মো. ফাইজুর রহমান।

এমনকি সেরা দশের তালিকায় নবম স্থান অধিকার করেছেন হলিক্রস কলেজের তাসনিমা তাবাসসুম এবং দশম স্থান অধিকার করেছেন রংপুর পুলিশ লাইনস কলেজের এস এম মুনতাসীর মোস্তাফিস।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ বছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে অনলাইনে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬৫ আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন। পাস করেন ৬০ হাজার ৯৫ জন। পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। পাস করা ৬০ হাজার ৯৫ জনের মধ্যে ছেলে ২২ হাজার ১৫৯ জন, যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৩৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। মেয়ে ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন, যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৬৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নম্বর ৯০ দশমিক ৭৫।

৩৭ সরকারি মেডিকেল কলেজের ৫ হাজার ৩৮০ আসনে এবং ৬৭ অনুমোদিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ৬ হাজার ২৯৩ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’ কর্তৃক প্রণীত নীতিমালার শর্তানুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর ও এসএসি বা সমমান এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ থেকে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে অর্জিত স্কোরের ভিত্তিতে মেধা ও পছন্দক্রম অনুযায়ী ৫ হাজার ৩৭২ পরীক্ষার্থীদের ৩৭ সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চল ব্যতীত দেশের সমতল অঞ্চলের উপজাতীয় কোটার শিক্ষার্থীদের তালিকা কোটার স্বপক্ষে সনদ বা প্রমাণসমূহ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইয়ের পর প্রকাশ করা হবে।

সরকারি মেডিকেল কলেজে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময়সীমা ২ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির অনলাইন আবেদনের জন্য আগামী ২৩ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। 

গত শুক্রবার এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ১৯টি কেন্দ্রের একাধিক ভেন্যুতে এ পরীক্ষা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ কল জ র ম পর ক ষ র পর ক ষ য় দশম ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ