সাইফ আলী খানের ওপর হামলাকারী শেহজাদ বাংলাদেশেরই ছেলে
Published: 21st, January 2025 GMT
ভারতের জনপ্রিয় নায়ক সাইফ আলী খানের ওপরে হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম শেহজাদ বাংলাদেশেরই ছেলে। তার বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রাজাবাড়িয়া গ্রামে।
শেহজাদকে গ্রেপ্তারের পরই মুম্বাই পুলিশ দাবি করে, “শেহজাদ বাংলাদেশের নাগরিক।” মুম্বাই পুলিশের এধারণাই সঠিক।
শেহজাদ বাংলাদেশের ঝালকাঠির ছেলে। এলাকায় তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। তিনি নলছিটি থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। হত্যা মামলার পরে তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে যান। পরিবারের সঙ্গেও তার কোনো যোগাযোগ নেই।
নলছিটি থানার পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শেহজাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
নলছিটির মোল্লারহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, শরীফুল ইসলাম শেহজাদ রাজাবাড়িয়া গ্রামের রুহুল আমিন ফকিরের ছেলে। শেহজাদ ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলের চালক ছিল। ২০১৭ সালে মোল্লারহাট স্টিল ব্রিজের কাছে রফিকুল ইসলাম নামে একজন মোটরসাইকেলচালককে হত্যার ঘটনায় শেহজাদকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার পরে সে এলাকা ছেড়ে আত্নগোপনে চলে যায়। এলাকায় থাকাকালে সে ছিনতাই, চুরি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত ছিল।
শেহজাদের বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেন, “আমাদের সঙ্গে শেহজাদের কোন যোগাযোগ নেই। শুনেছি সে ভারতে আটক হয়েছে। সে কবে, কিভাবে ভারত গেছে তা আমাদের জানা নেই। খারাপ কাজ করলে, সে শাস্তি পাবে, এটাই কামনা করছি।”
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, “আমাদের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি। তবে শেহজাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় এবং ঢাকায় হত্যা মামলা রয়েছে। সে ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত বলে পুলিশের কাছে রিপোর্ট রয়েছে।”
ঢাকা/অলোক/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।