পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গভীর রাতে বসতঘরে ঢুকে হাত- পা ও মুখ বেঁধে শাহনাজ পারভীন লাকি (৫০) নামের এক নারীকে হত্যা করেছে ডাকাতদল। পরে ওই বাড়ির মালামাল লুট করেছে তারা। 

সোমবার (২০ জানুয়ারি) গভীর রাতে কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সলিমপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে এ ডাকাতি হয়। 

এর আগেও ওই ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। ফলে, সেখানে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শাহনাজ পরভীন লাকির স্বামী সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। সে সুবাদে তিনি ঢাকায় থাকেন। তাদের দুই সন্তান কলাপাড়া শহরের বাসায় ছিলেন। গত রাতে ওই নারী গ্রামের বাড়িতে একাই ছিলেন। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে তার লাকির দেবর শাহ আলম মিয়া ওই বাড়িতে গিয়ে পেছনের দরজা খোলা দেখতে পান। তিনি ঘরে ঢুকে লাকির হাত-পা ও মুখ বাঁধা লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। তার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। 

শাহ আলম মিয়া বলেছেন, “সকালে আমি আমার ভাইয়ের ঘরের সামনে গিয়ে ভাবিকে অনেক ডাকাডাকি করি। তখন সামনের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে ঘরের পিছনে গিয়ে দরজা খোলা দেখতে পাই। ভিতরে ঢুকে ভাবির হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাই। এর আগেও আমাদের এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। আমার ভাবিকে হত্যার বিচার চাই।”

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ মাতুব্বর বলেছেন, “আমাদের এলাকায় পরপর তিনটি ডাকাতি ঘটল। আমার মনে হচ্ছে, এ কাজের সঙ্গে একটি চক্র জড়িত। আমরা দুষ্কৃতকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

কলাপাড়া থানার ওসি জুয়েল ইসলাম বলেছেন, “শাহনাজ পারভীন লাকির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।”

ঢাকা/ইমরান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল প ড়

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ