গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, ‘‘কমিশন গণমাধ্যমের টেকসই সংস্কারের জন্য কাজ করছে, যা শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক নয়, বরং শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামোর অংশ হবে।’’ 

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকায় সার্কিট হাউস রোডের তথ্য ভবন সম্মেলন কক্ষে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের প্রতিনিধিদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। আন্তর্জাতিক পরিসরে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসারে একযোগে কাজ করছেন এমন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জোট হচ্ছে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন।  

নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন কী ধরনের সুপারিশ করবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। 

মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের সদস্য দেশগুলোর ঢাকাস্থ দূতাবাসসমূহের প্রতিনিধিরা আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে গণমাধ্যম সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে চান। অপতথ্য ও ভুয়া তথ্য প্রচারের ঝুঁকি মোকাবিলায় কমিশনের কোনো ভূমিকা থাকবে কি না, সে সম্পর্কে কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে গণমাধ্যম সংস্কারে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে কি না, সে সম্পর্কেও তারা জানতে চান।           

কমিশন প্রধান ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসকের আমলে সংবাদ মাধ্যমের ওপর যেসব অযাচিত আক্রমণ এসেছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতেও সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় কমিশন প্রধান মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের প্রতিনিধিদের জানান, আমাদের মেয়াদ ৯০ দিন। 

আমরা চেষ্টা করছি আমাদের অংশীজন প্রকাশক, সম্পাদক, সাংবাদিক, বেতার ও টেলিভিশন মালিক এবং সাধারণ জনগণ-দর্শক-শ্রোতা যারা গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট তাদের সাথে আলোচনা করে একটি নির্ভরযোগ্য সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরা। 

তিনি বলেন, ‘‘আমরা সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের কথা শুনছি এবং তাদের মতামত গ্রহণ করছি। রাজনৈতিক দলগুলোকেও গণমাধ্যম সম্পর্কিত তাদের পর্যাবেক্ষণ এবং সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’’ 

প্রতিনিধি দলের অপর এক সদস্যের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় সরকারি আইন অনুযায়ী বীমা সহায়তা প্রদান করা যায় কিনা এ বিষয়টি কমিশন বিবেচনা করছেন।

এ আলোচনা সভায় কমিশন সদস্য শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, ফাহিম আহমেদ, জিমি আমির, মোস্তফা সবুজ, টিটু দত্ত গুপ্ত, আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের প্রতিনিধি ইউএস অ্যাম্বাসির স্টিফেন এফ ইবেলি, ব্রিটিশ হাই কমিশনের ভানেসা বিউমন্ট, জাপান অ্যাম্বাসির মিচিকো ইউইডিএ, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের লারা এ্যাডামস, কানাডিয়ান হাইকমিশনের সিওবনান কেন, সুইডেন অ্যাম্বাসির পাওলা কাস্ট্রো নেইডারস্টাম, নেদারল্যান্ডস অ্যাম্বাসির কোর স্টাউটেন, ফ্রান্স অ্যাম্বাসির ইয়ামিলি পালাহাউন, সুইজারল্যান্ড অ্যাম্বাসির আলী সোহেল ইবনেসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। 

গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।  

সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।

খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।

বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।

২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’। 

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’

ঢাকা/কেএন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে
  • ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লুলার প্রতিবাদে অন্যরাও শামিল হোক
  • এমন কিছু করবেন না যাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়: মির্জা ফখরুল
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
  • বিতর্কমুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব‍্যবস্থা না হলে গণতন্ত্র আবার হুমকিতে পড়বে: এবি পার্টি
  • মানুষ ঠিকমতো ইভিএম বোঝে না, পিআর বুঝবে কী করে: মির্জা ফখরুল