ঢাকার নবাবগঞ্জে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের রাহুৎহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন তিনি। বর্তমানে নাজমুল হোসেন অন্তর নামের ওই সাংবাদিক ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক্স (পঙ্গু) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নাজমুল হোসেন একই ইউনিয়নের খানেপুর গ্রামের মানিক বেপারির ছেলে। তিনি বেসরকারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ও আমাদের সময়ের দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি।
নাজমুল শনিবার রাতে দোহারের জয়পাড়া মাহমুদিয়া আলিম মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে যান। সেখান থেকে খানেপুরের বাড়ি ফেরার সময় রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে রাহুৎহাটি এলাকায় তাঁর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে মুখোশধারী দুই দুর্বৃত্ত। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র দেখে নাজমুল মোটরসাইকেল ফেলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় পেছন থেকে তাঁর হাত-পায়ে কোপানো হয়। তিনি দৌড়ে পাশের জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনে আশ্রয় নিলে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের সদস্যরা নাজমুলকে উদ্ধার করে শুরুতে বান্দুরা মডার্ন ক্লিনিকে নিয়ে যান। পরে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। 
অবস্থার অবনতি হলে নাজমুলকে রাতেই ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকরা। জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মো.

সাইমুনের ভাষ্য, নাজমুল রক্তাক্ত অবস্থায় এসে শনিবার রাতে তাঁকে জানিয়েছিলেন, হামলাকারীরা দু’জন ছিল। তাদের মুখ ছিল ঢাকা, হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র।
নাজমুলের ছোট ভাই নয়ন বলেন, রোববার সকালে তাঁর ভাইয়ের মোটরসাইকেলটি নয়নশ্রী ইউনিয়নের দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে ইছামতী নদীর তীর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। হামলাকারীরা ডাকাত হলে মোটরসাইকেল ফেলে যাওয়ার কথা নয়। এতেই বোঝা যায়, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত। তিনি এতে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হরগোবিন্দ সরকার বলেন, নাজমুলের ডান হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের গুরুতর চিহ্ন ছিল। তাঁর প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে রাতেই জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় একই ইউনিয়নের দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন ইছামতী নদীর তীর থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি এখনও পাওয়া যায়নি। তারা তদন্ত শুরু করেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
 
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।

বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।

এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ