বিপিএলের চলতি আসরে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না দুর্বার রাজশাহীর। পারিশ্রমিক সংক্রান্ত ইস্যুতে এবার চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে দলের বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে গতকাল নাটকীয় জয় পেলেও, ম্যাচে অংশ নেননি রাজশাহীর ছয়জন বিদেশি খেলোয়াড়। এই ঘটনায় ম্যাচের পর মুখ খুলেছেন রাজশাহীর অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ।  

রংপুরকে মাত্র ২ রানে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন জানান, ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই দলে চলছিল নানা নাটকীয়তা। তিনি বলেন, ‘দিনের শুরু থেকেই অনেক ড্রামা দেখেছি। শুনেছি, টিম ম্যানেজমেন্ট নাকি টাকা নিয়ে বিদেশিদের রুমে নক করেছে, কিন্তু তারা দরজা খোলেনি। সবাই শুরুতে একটু হতাশ ছিল। তবে, উইকেট সহজ ছিল না। শেষ পর্যন্ত পুরস্কার পাওয়া গেছে।’  

বিদেশি ক্রিকেটাররা কেন খেলেননি, সে বিষয়ে তাসকিন বলেন, ‘আমাদের বোর্ড থেকে তাদের অনুরোধ করা হয়েছিল মাঠে নামার জন্য। বলা হয়েছিল পারিশ্রমিক নিয়ে সমস্যা হলেও খেলতে। কিন্তু তবুও তারা খেলেনি। এমন অভিজ্ঞতা আমার জীবনে প্রথম।’  

রাজশাহীর খেলোয়াড়দের নিজেদেরও ম্যাচের দিন পারিশ্রমিকের আংশিক পরিশোধ করা হয়। তাসকিন বলেন, ‘আমাদেরও আজ (গতকাল) চেক দেওয়া হয়েছে, ২৫% পরিশোধ করা হয়েছে। আশা করি, আর কোনো ঝামেলা হবে না। যদিও শুরুটা সুখকর ছিল না, জয় পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে।’  

পরবর্তী ম্যাচেও বিদেশি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ নিয়ে নিশ্চিত নন তাসকিন। তিনি বলেন, ‘তারা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আশা করব তারা আসবে। তবে এখনো কিছু বলতে পারছি না।’  

বিসিবির ভূমিকা নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘ফারুক স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, টাকা নিয়ে দেরি হলেও বিসিবি বিষয়টি সমাধান করবে। তবে বিদেশি খেলোয়াড়রা পরিষ্কার জানিয়েছে, টাকা না পেলে তারা খেলবে না।’ 

এ বিষয়ে বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু জানান, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। এই সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। তবে প্রতিনিয়ত নতুন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি, যা ঠিক করতে হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ