‘ফ্লাওয়ার ফেস্ট’-এ জেমস ও আলোচিত ৭ ব্যান্ড
Published: 27th, January 2025 GMT
ছোট একটা বিরতির পর আবার মঞ্চে উঠতে যাচ্ছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী জেমস। এবার এই রকতারকা পারফর্ম করবেন বন্দর নগরী চট্টগ্রামে আয়োজিত ‘ফ্লাওয়ার ফেস্ট’-এর ‘গালা নাইট’ কনসার্টে। সঙ্গে থাকছে তাঁর ব্যান্ড নগর বাউল।
আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে কনসার্টটি অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসন চট্টগ্রামের এ আয়োজনে জেমস ও নগর বাউলের পাশাপাশি পারফর্ম করবে এ সময়ের আলোচিত আরও ৭টি ব্যান্ড। সে তালিকায় রয়েছে আর্টসেল, শিরোনামহীন, লালন, আভোয়েড রাফা, আর্বোভাইরাস, উন্মাদ ও তীরন্দাজ। আয়োজকরা জানান, চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট ডিসি পার্কে মাসব্যাপী ‘ফ্লাওয়ার ফেস্ট’র আয়োজন করা হয়েছে। এই ফুল উৎসবের সমাপনী দিনে অনুষ্ঠিত হবে ‘গালা নাইট’ কনসার্ট। সব শ্রেণির দর্শকের জন্য কনসার্ট উন্মুক্ত থাকবে।
৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে দর্শকের জন্য স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেওয়া হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হবে ব্যান্ডগুলোর পরিবেশনা। ৭টি ব্যান্ডের পরিবেশনা শেষে শো স্টপার হিসেবে ব্যান্ড নগর বাউল সদস্যদের সঙ্গে মঞ্চে উঠবেন দেশসেরা রকস্টার জেমস। ফুল ও সংগীতপ্রেমীদের জন্য কনসার্টটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন। জেমসের কথায়, সংগীতের মাধ্যমে যে কোনো উৎসব আরও বর্ণাঢ্য করে তোলা যায়।
‘ফ্লাওয়ার ফেস্ট’-এর ‘গালা নাইট’ কনসার্ট তারই একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। জেমসের এ কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন কনসার্টে অংশ নেওয়া অন্যান্য ব্যান্ড সদস্যরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কনস র ট
এছাড়াও পড়ুন:
তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।
মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।
সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।
প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।
আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।
মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।