সিদ্ধিরগঞ্জে লোহা চোর আকরামের কাঁচাবাজার উচ্ছেদ
Published: 27th, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী দশতলা এলাকায় অর্ধশত কোটি টাকার মূল্যের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে কাঁচাবাজার বসায় আদমজীর লোহা চোর আকরাম। অবশেষে ৫দিনের মাথায় সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে সেই বাজার উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদের সময় জায়গার মালিক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে উচ্ছেদের সময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও লোহা চোর আকরাম ভয়ে ঘটনাস্থলে আসেনি। পরে বিকালের দিকে আকরামের শ্যালক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সোহাগ ও আকরাম বাহিনীর সদস্যরা নিলামে অনেক পণ্যসামগ্রী বিক্রি করে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কদমতলী ১০তলার সামনে ৯৫ শতাংশ জায়গা দখল করে গত ৫দিন ধরে কাঁচাবাজার বসায় আদমজীর লোহা চোর আকরাম। সে নাকি এই জায়গার লীজ এনেছে। এসময় সে নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দেয়। এবং সেনাবাহিনীর কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে বাজার বসাচ্ছে বলে প্রচার করে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাত পর্যন্ত ৩০টি দোকান নির্মাণ করা হয়। আকরামের নির্দেশে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে সিদ্ধিরগঞ্জের দুই নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি ও আকরামের শ্যালক সোহাগ, আকতার, বাদল, আলম, লিটন, সুমন ও রিতু।
এদিকে অবৈধ বাজার নিয়ে এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যবসায়িদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানতে পারে জমির মালিকরা। রোববার বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতর অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প থেকে দুটি গাড়ি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এবং খোঁজ খবর নেয়।
ওদিকে সোমবার দুপুরে এক ঘন্টার মৌখিক নোটিশে কাঁচাবাজারের সকল ব্যবসায়িদের তাদের দোকান নিজ দায়িত্বে অপসারণ করার নির্দেশ দেন জমির মালিক। এসময় জমির মালিকদের একজন জাহাঙ্গীর আলম জানান, এই জমির মালিক নীট কনসার্ন গ্রুপ।
আমাদের কাছে না জিঞ্জেস করে কে বাজার বসিয়েছে? পরে ব্যবসায়ীরা তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়া শুরু করে। সময় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন লোহা চোর আকরামের উপর।
তারা বলেন, টাকা খরচ করে দোকান নির্মাণ করে সেখানে মালামাল উঠিয়েছি। এখন হঠাৎ করে আমাদের এই জায়গা ছাড়তে হচ্ছে। এতে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়েছি। আকরামের কোন খবর নাই। সে এখন দুরে সরে আছে।
এলাকাবাসী জানায়, নানা অপকর্মের হোতা লোহা চোর আকরাম দীর্ঘ বহু বছর পলাতক থাকার পর ৫ আগস্টের পর প্রকাশ্যে আসে। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিনের নাম ভাংগিয়ে শুরু হয় তার দখল বাণিজ্য।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ চ র আকর ম ব যবস য় আকর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস