Samakal:
2025-09-18@03:32:34 GMT

নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ

Published: 28th, January 2025 GMT

নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ

নির্বাচন বা ক্ষমতার জন্য নয়, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, রাষ্ট্র বিনির্মাণে ও দেশ পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের প্রত্যয় নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক শক্তি’।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের জানান দেয় নতুন এই রাজনৈতিক দলটি। এ সময় দলটি তাদের কার্যাবলী ও লক্ষ্য তুলে ধরে।

দলের আহ্বায়ক মেজর জেনারেল মো.

এহতেশাম উল হক নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জানান। তিনি বলেন ‘বিপ্লবী ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের নির্দলীয় একটি রাজনৈতিক সংগঠন হচ্ছে সার্বভৌমত্ব আন্দোলন। নির্বাচন বা ক্ষমতার জন্য নয়, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, রাষ্ট্র বিনির্মাণে ও দেশ পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে সার্বভৌমত্ব আন্দোলন, যারা সবসময় দেশ, মাটি ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত থাকবে।’

তিনি জানান, আমরা একটি আধুনিক জবাবদিহিতাপূর্ণ ও সুসজ্জিত পুলিশবাহিনী আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করব। নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করব ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখব। 

শীঘ্রই বর্তমান সরকারের সঙ্গে আমরা বৈঠকে বসতে পারব এমন আশা ব্যক্ত করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক শক্তির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা বর্তমান সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে আগ্রহী। সরকার আমাদের সেই সুযোগ দিবে, এমন প্রত্যাশা করছি।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর চৌধুরী ওবায়দুল্লাহ মামুনসহ অন্যান্য নেতারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নতুন যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে, সেখানে নিশ্চিত করেই জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রশ্নটি নাগরিকদের কেন্দ্রীয় একটি চাহিদা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই পদ ছাড়া পদোন্নতি দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল যে কয়টা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে, তার অন্যতম আমলাতন্ত্র।

জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণের বৃত্ত ভেঙে জনবান্ধব করার একটা বড় সুযোগ এনে দিয়েছিল অভ্যুত্থান। কিন্তু শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীল হয়ে ওঠায় সেই সুযোগ অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিরোধিতার কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। অন্যদিকে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন। কিছু মুখকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনপ্রশাসনে সেই পুরোনো চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পদ ছাড়া পদায়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনে যেভাবে আগের সরকারের চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে, সেটা যারপরনাই দুঃখজনক।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, উপসচিব স্তরে যেখানে আগে থেকেই পদের চেয়ে ৬০০ কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন, সেখানে আগস্ট মাসে নতুন করে ২৬৮ জনকে এই পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতির আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে হরেদরে পদোন্নতি দেওয়ার অনেক নজির আছে। এর কারণ একটাই, আমলাতন্ত্রকে তুষ্ট রাখা। অন্তর্বর্তী সরকার এই চর্চায় ছেদ ঘটাতে পারবে, সেটাই সবাই প্রত্যাশা করেছিল।

পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আগের জায়গাতেই রেখে দেওয়া হয়। এর মানে হচ্ছে তাঁরা আগের দায়িত্বই পালন করেন, কিন্তু মাঝখান থেকে বেতন-ভাতা বাড়ে। উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা তিন বছর চাকরি পাওয়ার পর বিনা সুদে গাড়ি কেনার জন্য ঋণসুবিধা পান। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের যেভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও খুব বেশি নেই। অবসরে যাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ও অন্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসনের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পরের ধাপে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পদ না থাকার পরও কেন পদায়ন করা হবে? এ ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদ বাড়ানো যায় কি না। আবার যেখানে এমনিতেই পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি, সেখানে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া কতটা যৌক্তিক?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়া যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরপরও কেন এমন পদোন্নতি—সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সরকার সম্ভবত আমলাতন্ত্রের চাপে রয়েছে। এই ধারণা শুধু তাঁর একার নয়, নাগরিক পরিসরের
বিস্তৃত একটি ধারণাও। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা হাজির করা উচিত।

মাথাভারী আমলাতন্ত্র সরকারি সেবা নাগরিকের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় একটা বাধা। অন্যদিকে সরকারকে এখানে বিশাল ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হয়। ফলে মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গতিশীল জনপ্রশাসনই সবাই প্রত্যাশা করে। জনপ্রশাসনের সব স্তরে পদোন্নতি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতেই হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ