ইসলামকে ব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষ টাকা লুট করেছে: ধর্ম উপদেষ্টা
Published: 29th, January 2025 GMT
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘এদেশে যারা টাকা লুট করেছে, তাদের চেহারা দেখলে কুতুব মনে হবে, কপালে-নাকে তাদের সিজদার দাগ। তারাই এদেশের অর্থ লুট করে নিয়ে গেছে। আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলামকে ব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষ টাকা লুট করেছে। ইনস্যুরেন্স কোম্পানির নামে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।’
আজ বুধবার সন্ধ্যায় চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে কওমি উদ্যোক্তাদের আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব বলেন।
বাংলাদেশ স্বাধীনের পর এদেশে আলেম-ওলামের মাধ্যমে অনেক সোসাইটি হয়েছে জানিয়েছে তিনি বলেন, অনেক এনজিও হয়েছে। অনেক বিজনেস এন্টারপ্রাইজ হয়েছে কিন্তু টিকে থাকতে পারিনি। বহু মানুষ বিশ্বাস করে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, এখন তারা দেউলিয়া। বিভিন্ন নামে ইসলামিক ইনস্যুরেন্স কোম্পানি রয়েছে। আলেম-ওলামাদের মাধ্যমে ইসলামিক ইনস্যুরেন্সের কোটি কোটি টাকা লুট হয়েছে। বিভিন্ন নামে ইসলামিক ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে যারা টাকা দিয়েছে তারা শেষ। আমিও দিয়েছি, শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে বলেছি, বাবা আমার লাভের দরকার নেই, আসলটা ফেরত দাও। দশ বছর পরে আসল মাল ফেরত পেয়েছি। আজকের অবস্থানে থাকলে তো তাকে ধরে নিয়ে জেলে দিয়ে দিতাম। এগুলো হচ্ছে প্রতারণা। ধর্মকে ব্যবহার করে প্রতারণা করা।’
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বহু প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও। অনেক আলেম সাদাসিধে মানুষকে বোঝাচ্ছেন যেখানে টাকা দিলে সুদমুক্ত লাভ পাওয়া যাবে, ওখানে দিলে সুদযুক্ত লাভ পাওয়া যাবে। ওইটা হারাম, এটা হালাল। হাজার হাজার মানুষ টাকা বিনিয়োগ করেছে।
তিনি আরও বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আলেমদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার যে চেতনা, ব্যবসা করার যে প্রয়াস এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা ছোট ইনভেস্ট করতে পারি, আস্তে আস্তে বড় হব। আলেম-ওলামায়েদের ভেতরে যেহেতু তাকওয়া আছে, তারা বিজনেসের ভেতর কোনরকম অনৈতিকতা করবেন না, ভেজাল করবেন না, ওজনে কম দেবেন না, মাপে কম দেবেন না। তাহলে বাজারে বিশুদ্ধ জিনিস, সলিট জিনিস পাওয়া যাবে।
কওমি উদ্যোক্তার ফাউন্ডার মাওলানা রোকন রাইয়ানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন রহিম আফরোজ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিয়াজ রহিম, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক এবং ইংলিশ থেরাপির ফাউন্ডার ও সিইও সাইফুল ইসলাম, বিক্রয় বন্ধু রাজীব আহমেদ, অনলাইন টেক একাডেমির ফাউন্ডার মুজতাহিদুল ইসলাম, হ্যাপিনেস কোচ কাঞ্চন এবং উইট ইনস্টিটিউটের ফাউন্ডার ও সিইও নাজিব রাফে।
কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলনটি যৌথভাবে সঞ্চালনায় করেন কামরুজ্জামান সুমন ও আবু সালেহ আহমদ। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা রোকন রাইয়ান বলেন, ‘কওমি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল অবহেলিত উদ্যোক্তাদের জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। আজকের এই সম্মেলনে প্রায় ২৫০০ উদ্যোক্তার উপস্থিতি প্রমাণ করে, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। ভবিষ্যতে এই প্ল্যাটফর্ম আরও বড় পরিসরে কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।’
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন কওমি উদ্যোক্তার কো-ফাউন্ডার মুমিনুল ইসলাম। তিনি অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়ে কওমি উদ্যোক্তার লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইনস য র ন স ল ট কর ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা: নাহিদের জবানবন্দি পেশ
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি পেশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দি পেশ শেষ করেন নাহিদ। তিনি গতকাল জবানবন্দি পেশ শুরু করেন।
আরো পড়ুন:
মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন নাহিদ ইসলাম
মালয়েশিয়া যাচ্ছেন নাহিদ ইসলাম
আজ বিকেলে তাকে জেরা করবেন এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।
এ মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে এ মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীকালে এ মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।খবর বাসসের।
এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরো দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
ঢাকা/এসবি