ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘এদেশে যারা টাকা লুট করেছে, তাদের চেহারা দেখলে কুতুব মনে হবে, কপালে-নাকে তাদের সিজদার দাগ। তারাই এদেশের অর্থ লুট করে নিয়ে গেছে। আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলামকে ব্যবহার করে এক শ্রেণির মানুষ টাকা লুট করেছে। ইনস্যুরেন্স কোম্পানির নামে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।’

আজ বুধবার সন্ধ্যায় চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে কওমি উদ্যোক্তাদের আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। 

বাংলাদেশ স্বাধীনের পর এদেশে আলেম-ওলামের মাধ্যমে অনেক সোসাইটি হয়েছে জানিয়েছে তিনি বলেন, অনেক এনজিও হয়েছে। অনেক বিজনেস এন্টারপ্রাইজ হয়েছে কিন্তু টিকে থাকতে পারিনি। বহু মানুষ বিশ্বাস করে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, এখন তারা দেউলিয়া। বিভিন্ন নামে ইসলামিক ইনস্যুরেন্স কোম্পানি রয়েছে। আলেম-ওলামাদের মাধ্যমে ইসলামিক ইনস্যুরেন্সের কোটি কোটি টাকা লুট হয়েছে। বিভিন্ন নামে ইসলামিক ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে যারা টাকা দিয়েছে তারা শেষ। আমিও দিয়েছি, শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে বলেছি, বাবা আমার লাভের দরকার নেই, আসলটা ফেরত দাও। দশ বছর পরে আসল মাল ফেরত পেয়েছি। আজকের অবস্থানে থাকলে তো তাকে ধরে নিয়ে জেলে দিয়ে দিতাম। এগুলো হচ্ছে প্রতারণা। ধর্মকে ব্যবহার করে প্রতারণা করা।’

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বহু প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও। অনেক আলেম সাদাসিধে মানুষকে বোঝাচ্ছেন যেখানে টাকা দিলে সুদমুক্ত লাভ পাওয়া যাবে, ওখানে দিলে সুদযুক্ত লাভ পাওয়া যাবে। ওইটা হারাম, এটা হালাল। হাজার হাজার মানুষ টাকা বিনিয়োগ করেছে।

তিনি আরও বলেন, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও আলেমদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার যে চেতনা, ব্যবসা করার যে প্রয়াস এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমরা ছোট ইনভেস্ট করতে পারি, আস্তে আস্তে বড় হব। আলেম-ওলামায়েদের ভেতরে যেহেতু তাকওয়া আছে, তারা বিজনেসের ভেতর কোনরকম অনৈতিকতা করবেন না, ভেজাল করবেন না, ওজনে কম দেবেন না, মাপে কম দেবেন না। তাহলে বাজারে বিশুদ্ধ জিনিস, সলিট জিনিস পাওয়া যাবে।

কওমি উদ্যোক্তার ফাউন্ডার মাওলানা রোকন রাইয়ানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন রহিম আফরোজ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নিয়াজ রহিম, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক এবং ইংলিশ থেরাপির ফাউন্ডার ও সিইও সাইফুল ইসলাম, বিক্রয় বন্ধু রাজীব আহমেদ, অনলাইন টেক একাডেমির ফাউন্ডার মুজতাহিদুল ইসলাম, হ্যাপিনেস কোচ কাঞ্চন এবং উইট ইনস্টিটিউটের ফাউন্ডার ও সিইও নাজিব রাফে। 

কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলনটি যৌথভাবে সঞ্চালনায় করেন কামরুজ্জামান সুমন ও আবু সালেহ আহমদ। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা রোকন রাইয়ান বলেন, ‘কওমি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল অবহেলিত উদ্যোক্তাদের জন্য একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। আজকের এই সম্মেলনে প্রায় ২৫০০ উদ্যোক্তার উপস্থিতি প্রমাণ করে, আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। ভবিষ্যতে এই প্ল্যাটফর্ম আরও বড় পরিসরে কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।’

অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন কওমি উদ্যোক্তার কো-ফাউন্ডার মুমিনুল ইসলাম। তিনি অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানিয়ে কওমি উদ্যোক্তার লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইনস য র ন স ল ট কর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ