ফেব্রুয়ারিতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীর।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টায় মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টিএসসিতে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

এসময় তারা ‘দিয়েছি তো রক্ত- আরো দেব রক্ত', ‘খুনি লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না', ‘বিচার চাই বিচার চাই, খুনি হাসিনার বিচার চাই' এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে মুহসিন হলের শিক্ষার্থী নোমান বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এই সরকারের কাজ ছিল খুনিদের বিচার কার্যক্রম করা। কিন্ত তারা তা করে নাই। এখন আবার আওয়ামী লীগ রাজপথে কর্মসূচি দিয়েছে। দ্রুত এই সরকার যেন গণআদালতে তাদের বিচার কার্যকর করে সেই আহ্বান জানাই।”

সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম বলেন, “জুলাই বিপ্লবে আমার ২ হাজারেরও অধিক ভাই-বোনদের রক্ত ঝরেছে। তার দাগ এখনো শুকায় নাই। এরপরও তারা কীভাবে বাংলাদেশে কর্মসূচি দেয় তা অবাক করার বিষয়।”

এ এফ আর হলের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান আল ফাহাদ বলেন, “সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ আমার ভাই-বোনদের নির্যাতন করে ক্যাম্পাস ছাড়া করেছিল তারা আবার আগুন সন্ত্রাসের খেলা করার জন্য প্রকাশ্য দিবালোকে কর্মসূচি দিয়েছে। অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।”

এ সময় তিনি আওয়ামী লীগকে জুলাই গণহত্যার দায়ে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি তোলেন।

গত ২৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

মোট ১০টি দাবিতে আগামী ১ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হরতাল অবরোধসহ ৫ ধরনের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

তাদের কর্মসূচিগুলো হলো—১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ, ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ, ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক কঠোর হরতাল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলা প্রত্যাহার এবং 'প্রহসনমূলক বিচার' বন্ধেরও দাবি জানানো হয়।

দলের পক্ষ থেকে এর আগে গত ১০ নভেম্বর রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েও নামতে পারেনি আওয়ামী লীগ।

এমন অবস্থার মধ্যেই মঙ্গল হরতাল, অবরোধ, সমাবেশ ও বিক্ষোভের ডাক দিলো আওয়ামী লীগ।

যদিও ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের কোথাও দলটির সক্রিয় কোন কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি। দলটির বেশিরভাগ শীর্ষ নেতাই দেশের বাইরে, পলাতক অথবা কারাগারে রয়েছেন। গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই রয়েছেন।

ঢাকা/সৌরভ/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল

ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‍“বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”

বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ