রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আজ শুক্রবার রোদের দেখা মেলেনি। দেশের দুয়েক স্থানে সামান্য বৃষ্টিও হয়েছে। মেঘলা আকাশ ও ঘন কুয়াশায়ও কমেনি তাপমাত্রা। এক দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। দেশের গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও বেড়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে আজ দেশের চার বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি অথবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
কুয়াশা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এই কুয়াশা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আজ দেশে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বাতাস প্রবাহিত হবে। গতিবেগ থাকবে ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার।
সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা রয়েছে ৭৮ শতাংশ। আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হয় ৫টা ৪৪ মিনিটে। আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ৬টা ৩৯ মিনিটে।
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়—৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও এখানে ছিল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা—৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ দেশের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। সকাল ৬টার মধ্যে কুমিল্লায় ১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে ৬টার পর নোয়াখালীর মাইজদিতে সামান্য বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা। তিনি বলেন, আজ সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। রাজধানীতে বৃষ্টির ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে।
চলতি জানুয়ারি মাসে মাত্র একটি মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। তা–ও এক দিন। আজ এই মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেও তাপমাত্রা তেমন কমল না। আগামীকালও তাপমাত্রা আজকের মতোই থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন শাহনাজ সুলতানা। তিনি বলেন, তবে রবি বা সোমবারে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে তা শৈত্যপ্রবাহের পর্যায়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আজ রাজধানীতে তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে গেছে। আজ নগরীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২০ দশমকি ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল এখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামীকাল কিছু এলাকায় কুয়াশা থাকলেও অনেক স্থানে আজকের মেঘলা আবহাওয়া না–ও থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো.
সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স লস য় স আজ দ শ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।