যশোরের মনিরামপুর উপজেলাার হাকিমপুর বাবুর মোড় নামক স্থানের একটি ধান ক্ষেত থেকে আব্দুর রশিদ গাইন (৫২) নামে বিএনপি নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) মরদেহটি উদ্ধার হয়।

মনিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, “আজ সকালে ঘন কুয়াশার মধ্যে মোটরসাইকেল চালিয়ে কেশবপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন আব্দুর রশিদ। হাকিমপুর বাবুর মোড়ে রাস্তার একটি বাক রয়েছে। বাক ঘুরতে গিয়ে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার নিচে পড়ে যান। ধারণা করা হচ্ছে, হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে।” 

মারা যাওয়া আব্দুর রশিদ গাইন কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ঘোপসানা গ্রামের জোহর আলী গাইনের ছেলে। তিনি সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক। আব্দুর রশিদ গাইনকে বিএনপি নেতা হিসেবে নিশ্চিত করেন দলটির সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের সভাপতি আকরাম হোসেন। 

আরো পড়ুন:

শিবচরে রেললাইনের পাশে মিলল যুবকের মরদেহ

গাইবান্ধায় রেললাইনের পাশে মরদেহ

আকরাম হোসেন বলেন, “আজ সকালে হাকিমপুর এলাকার একটি ধান ক্ষেতে আব্দুর রশিদের মরদেহ পড়ে থাকার খবর স্থানীয় লোকজন আমাদের ফোনে জানান। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুর রশিদের মরদেহের পাশে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখেছি। তিনি হত্যা, নাকি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”

ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, “কেশবপুর-পুলেরহাট ভায়া রাজগঞ্জ সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে। রাজগঞ্জ এলাকায় একটি মাঠে ঠিকাদারের নির্মাণ সামগ্রী রাখা আছে। আব্দুর রশিদ সেখানে নৈশপ্রহরীর কাজ করতেন।”

তিনি আরো বলেন, “আজ সকালে খবর পেয়ে স্বজনরা এসে নিহতের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান। আমরা খবর পেয়ে স্বজনদের বুঝিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”

ঢাকা/রিটন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র মরদ হ ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ