ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) স্বৈরাচার আওয়ামী দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অপসারণসহ ৯ দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রদল।

শনিবার (১ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

স্মারকলিপি প্রদানকালে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আনারুল ইসলাম, সদস্য রাফিজ আহমেদ ও নুর উদ্দিনসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃদ্ধি করা ফি কমাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করতে হবে; হলে মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদান করতে হবে; গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব স্থাপনার নাম দ্রুত পরিবর্তন করতে হবে; স্বৈরাচারীর দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে দ্রুত অপসারণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধীতাকারী সব শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে সব নিয়োগের সুষ্ঠু তদন্ত করে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করা; সব ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ ও নির্মাণ সরঞ্জাম ক্রয়ের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে; শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে; পশ্চিম পার্শ্বে প্রধান ফটক নির্মাণ ও সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত করতে হবে।

শাখা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্র সংগঠন। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তির দাবির সঙ্গে আছি। শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সে জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাবিগুলো উপাচার্যের কাছে পেশ করা হয়েছে।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম রকল প ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

দোয়ার ফজিলত ও আদব

দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)

আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)

মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)

‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)

দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)

দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)

নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)

নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)

দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।

হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

সম্পর্কিত নিবন্ধ