ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফয়জুল হক মুন্সীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া একই ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ইদ্রিস মোল্লার বাম হাত কেটে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদেরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আজ রোববার সকালে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। 

ভাঙ্গা উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মো.

সাঈদ মুন্সী বলেন, ‘ভাঙ্গায় দুই ধারায় বিএনপির রাজনীতি বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল ও অন্যপক্ষে শামা ওবায়েদ। আমরা শহীদুল ইসলাম বাবুল ভাইয়ের পক্ষে। সম্প্রতি, ভাঙ্গায় কৃষক দলের কর্মীসভায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও নেতা-কর্মীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে আসছিলেন শামা ওবায়েদ এবং ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার সেলিমের সমর্থক ঘারুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আনোয়ার মাতুব্বর ও সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হক মুন্সীর লোকজন। তারই জেরে আজ এ সংঘর্ষ হয়েছে।’ 

ঘারুয়া ইউনিয়নের খারদিয়া ৮নং ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লা বলেন, ‘গত ২৫ জানুয়ারি মালিগ্রামে কৃষক দলের কর্মী সভায় আমার নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সেখানে প্রতিপক্ষের চান মিয়া মাতুব্বর, ইয়াদ আলী মীর গ্রুপের লোকজনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান আমাদের লোকজন। তারই জেরে গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে কৃষক দলের কর্মী মল্লিক ফরাজী, আনসার মীর, তোতা খলিফাসহ ৭-৮ জনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এর পর আজ সকালে শরিফাবাদ বাজারে পুনরায় কৃষক দলের নেতাকর্মীকে মারধর করেন নান্নু, ইয়াদ আলী, জাহাঙ্গীর খলিফা ও কুতুবউদ্দিন ফরাজীর লোকজন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ান।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা) সার্কেল মো. আসিফ ইকবাল বলেন, ‘রাত সাতটার আগ পর্যন্ত কোনো পক্ষের অভিযোগ পাইনি। তবে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ আহত ব এনপ র স র ল কজন স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার একটি বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।

রবিবার (২ নভেম্বর) মধ্যরাত ৩টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে বেঁধে ডাকাতি

বগুড়ায় বৃদ্ধাকে খুন করে ডাকাতি: গ্রেপ্তার ৪, টাকা উদ্ধার

ভুক্তভোগী সাথী বেগম বলেন, “রাত ১টার দিকে একটি শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভাঙে। সে সময় বিষয়টি সেভাবে আমলে নেইনি। রাত ৩টার দিকে উঠে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে বসলে জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দুই যুবক। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে তারা আমাদের বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটিতে একের পর এক লুট করতে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতি।” 

তিনি বলেন, “ডাকতরা নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রেখে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে যায়।”

প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন, “জানালার গ্রিল কেটে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে দুইজন। পরে ডাকাত দলের আরো ২২-২৩ জন সদস্য বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরো কয়েকজন পাহারায় ছিল। ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্যের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়েই অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলান। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি হয়।”

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, “আমার তিন ছেলে দেশের বাহিরে থাকে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েকদিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। তারা আমাদের পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছু জানত। কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি এমনকি বাসায় ওয়াইফাই বন্ধ সবই জানত। আমার ধারণা, স্থানীয় লোক এর সঙ্গে জড়িত। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দেব।”

ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, “আমরা ভোর ৫টার দিকে বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারি। পরবর্তীতে বাইরে থেকে লক করা রুম খুলে আমরা আটকে থাকা পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করি। তারপর বিষয়টি জানাজানি হয়।”

রবিবার (৩ নভেম্বর) গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “সকাল ৬টার দিকে দিকে আমি ৯৯৯ থেকে একটি কল পেয়ে এ বিষয়ে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ